চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মোড়ে মোড়ে স্থানীয়দের কাছে 'রোমিও' খেতাব পাওয়া বখাটেদের উৎপাতে অসহায় হয়ে পড়েছে মেয়েরা। আর অভিভাকরা রয়েছেন চরম দুঃশ্চিন্তায়। মেয়েদের স্কুল-কলেজ আর কোচিংয়ের সামনে এসব রোমিওদের আড্ডা বেড়ে যাওয়ায় শহরের কয়েকটি এলাকায় ভয়াবহ যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। বারবার সদর মডেল থানা পুলিশকে জানিয়েও আশানুরূপ কোন ফল পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবকরা।
জানা গেছে, নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, কামাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ ও নবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের ক্লাশ শুরু হওয়ার সময় এবং ছুটির সময় ওইসব এলাকায় বখাটেদের উৎপাত ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বখাটেরা মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে ধূমপান, চায়ের আড্ডা, কখনো গান-বাজনার আসর বসাচ্ছে। কেউ কেউ আসছেন মটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার নিয়ে। স্কুল-কলেজ শুরু ও ছুটির সময় রাস্তার ওপর মটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের লাইন পড়ে যাচ্ছে। এতে একদিকে যানজট তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের কবলে পড়ে স্কুল-কলেজগামী মেয়েরা নাজেহাল হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সন্তান ও আত্মীয় হওয়ায় অভিভাবকরাও ভয়ে বখাটেদের কার্যকলাপের প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বখাটেদের সাবধান করলে রাতের আঁধারে বখাটেরা ওই শিক্ষককে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। ওই ঘটনায় থানায় মামলা হলেও বখাটেরা ধরা না পড়ায় প্রাণভয়ে ওই শিক্ষক নিজে থেকেই বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যান। এদিকে গত বছর কয়েকজন স্থানীয় যুবক প্রেসক্লাব মোড়ে অবস্থান নিয়ে বখাটেদের অপতৎপরতা প্রতিহত করা শুরু করলে শহরে তাদের দৌড়াত্ম কিছুটা কমে। কিন্তু আবার তাদের উৎপাত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব রোমিওদের তালিকায় নবাবগঞ্জ ক্লাব সুপার মার্কেটের কয়েকজন কর্মচারীও রয়েছে বলে অভিযোগ।
আজ শনিবার ছিল নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ভোজ। এদিন সকাল থেকেই 'রোমিওরা' মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে, আবার এক মোটরসাইকেলে ৩-৪জন উঠে, কেউবা প্রাইভেটকার নিয়ে একই রাস্তায় একাধিবার চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। এতে করে সকাল ১০টার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি সদর মডেল থানার ওসি মো. মাজহরুল ইসলামকে জানানো হলে তিনি নিজেই ঘটনাস্থলে আসছেন বলে জানান। তবে কোন বখাটে ধরা পড়েনি।
এ পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের আশা পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম নিজেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে যোগদানের পর যেমন মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে তিনি সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিয়েছেন, ঠিক তেমনি এবার তিনি বখাটেদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে অভিভাবকসহ স্কুল-কলেজগামী মেয়েদের স্বস্তি দেবেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ৭ জানুয়ারি, ২০১৬/সিফাত/এস আহমেদ