দিনাজপুরের খানসামা ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে ডাকা অর্ধ দিবস হরতাল চলাকালে পুলিশ ও স্থানীয় জনতার মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ১৩ রাউন্ড টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি পুলিশের।
খানসামা ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে রবিবার খানসামা উপজেলায় অর্ধ দিবস সর্বাত্মক হরতালের ডাক দেয় জাতীয়করণ বাস্তবায়ন কমিটি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হরতালকে কেন্দ্র করে রবিবার সকাল থেকে খানসামা উপজেলা সদরের সকল দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল। সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হলেও দুপুর ১২টায় খানসামা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মোড় থেকে হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি খানসামা থানা অতিক্রম করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এসময় পুলিশের সাথে জনতার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং পরে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ বিক্ষুদ্ধ জনতার উপর টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে জনতাও পুলিশকে লক্ষ্য করে পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে জনতা থানা লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় দু'পক্ষের সংঘর্ষে পুরো খানসামা উপজেলা শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
খানসামা থানা পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে পার্শ্ববর্তী বীরগঞ্জ ও দিনাজপুর শহর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। দুপুর আড়াইটায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসার পর পুলিশ বিশাল বহর নিয়ে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি ও গ্রেফতার অভিযান চালায়।
খানসামা ডিগ্রী কলেজ জাতীয়করণ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু হাতেম জানান, পুলিশ বিনা উস্কানিতে জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালায়। হামলার পর পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালায় এবং কমপক্ষে ১০জন নিরীহ পথচারীকে গ্রেফতার করে। এর আগে গত শনিবার রাতে পুলিশ ৫জনকে আটক করেছে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে খানসামা থানার ওসি আব্দুল মতিন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ১৩ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। দুইজন পুলিশ আহত হয়েছে।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ আশরাফ জানান, খানসামা ডিগ্রী কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে হরতালের পর স্থানীয় জনতা পুলিশের উপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতেই টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করতে হয়েছে। বর্তমানের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এদিকে খানসামা থানার ওসি আব্দুল মতিন জানান, শনিবার দিবাগত রাতে পাঁচ অন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- ছাত্রলীগ সদস্য রাকেশ কুমার গুহ, মো. আব্দুল লতিফ রানা, মো. রফিকুল ইসলাম, সোলজার ও বিএনপির কৃষক দলের উপজেলা সভাপতি আতাউর রহমান।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ