সারাদেশে অনলাইনে আবেদনকৃত দাবিদার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের অংশ হিসাবে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়ে এ তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তালিকায় অনলাইনে আবেদনকৃত ২৩৫ জনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে 'ক' শ্রেণিতে ৬৩ জন, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে 'খ' শ্রেণিতে ৩৭ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে ১৯ জনকে। এ তালিকা প্রকাশের পর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ ও সাধারণ মানুষ। এমনকি যাচাই-বাছাই বোর্ডের অনেক সদস্যই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তালিকায় মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীরা স্থান পেয়েছে বলে দাবি করেছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ছড়াছড়িও রয়েছে এ তালিকায়, দাবি তাদের। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার জামাল উদ্দীন জানান, জামায়াত নেতা উপজেলার হরিণাকুণ্ডু গ্রামের ছলিম উদ্দীনকে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে অনৈতিকভাবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে 'ক' শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। একই গ্রামের আরজান আলীকেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে 'খ' শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখ জনক। আরজান আলী কখনও মুক্তিযুদ্ধ তো দূরের কথা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতাও করেননি।
এদিকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে অনলাইনে আবেদনকারীদের কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই জানান। এ নিয়ে ফুঁসে উঠেছেন উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার সাধারণ মানুষ। বোর্ডের সদস্য উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মাস্টার মহিউদ্দীন আহাম্মেদ ও ডেপুটি কমান্ডার শামসুল ইসলাম বলেন, হরিণাকুণ্ডু গ্রামের মৃত আইজদ্দীনের ছেলে আরজান আলী কখনও মুক্তিযুদ্ধ করেননি, এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতাও করেননি, তাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। বোর্ডের সভাপতি গায়ের জোরে এসব করেছেন।
যাচাই-বাছাই বোর্ডের সভাপতি নুরুদ্দীন আহাম্মেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের পরস্পর বিরোধের কারণ। তবে ছলিম উদ্দীনকে আমি ভাল চিনি না বলেই তার সম্পর্কে আমার একটু আপত্তি ছিল। কীভাবে সে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। আর আরজান আলী ঠিক আছে। সে প্রকৃত আওয়ামী লীগ করে। এ ব্যাপারে বোর্ডের সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন জানান, তালিকা করা হয়েছে বোর্ড সম্মিলিত সিদ্ধান্তে। এখানে আমার কিছুই করার নেই।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ