কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে এক জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় স্থানের নাম চিলপাড়া ব্রিজ। ব্রিজের উপর থেকে নিচে পানির সাড়ি, ব্রিজসংলগ্ন অংশে ডাকাতিয়া নদীর মাঝে দ্বীপসদৃশ বাড়ি, পানিতে বহমান নৌকা এক অপরুপ সৌন্দর্য্যরে সৃষ্টি করে। যা দেখতে সারা বছরই ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমায় ব্রিজের উপর ও সড়কের আশেপাশে।
বিশেষ করে ঈদ মৌসুমে চিলপাড়া এলাকায় মানুষের ভিড় দেখে মনে ঢাকা-চট্রগ্রামের বিখ্যাত কোন পর্যটন স্পট এটি। চলতি ঈদুল ফিতরের মৌসুমে পর্যটকদের ভিড় ব্রিজের এলাকা ছাড়িয়ে ব্রিজের দুই পাশের চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলায় প্রায় এক কিলোমিটারের অধিক স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি মোটর সাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি সৃষ্টি করে এক অপরুপ সৌন্দর্য্যরে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে নাঙ্গলকোট কিংবা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অতি সহজেই আসা যায় এখানে।
এদিকে এ এলাকার মানুষের জনপ্রিয় এই পর্যটন স্পটটি এখনো চোখে পড়েনি সরকার কিংবা বে-সরকারি কোন উদ্যোক্তার। ঈদ মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসলেও তাদের জন্য নেই ভালো কোন বসার স্থান। ব্রিজের দুই পাড়ে এবং চিওড়া-ঢালুয়া সড়কের পাশে বসেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে হয় পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের। সড়কের পাশে বসায় প্রায়ই দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও দেখা দেয়। এছাড়াও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকায় দুর দুরান্ত থেকে আগত ভ্রমণপিপাসুরা স্থানীয় কিছু বখাটের ইভটিজিং ও হয়রানির শিকার হয়। স্বীকৃত কোন পর্যটন কেন্দ্র না হওয়ায় এবং দুই উপজেলাতেই এর সীমানা বিস্তৃত থাকায় পর্যাপ্ত কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই এখানে। তাই মাঝেমধ্যেই ছোটখাট কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া ইউনিয়ন ও নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে এই চিলপাড়া ব্রিজ। ব্রিজের একপাশে নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের পুঁটিজলা আর অন্য পাশে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া ইউয়িনের চিলপাড়া গ্রামের অবস্থান। ডাকাতিয়া নদীর উপর ইতিপূর্বে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ের বরাদ্ধে চৌদ্দগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য ডা: তাহের এই ব্রিজটি নির্মাণ করেন। ব্রিজটি নির্মাণের পর থেকেই ভিড় জমে দর্শনার্থীদের। বর্তমান সরকারের সময়ে চিওড়া-ঢালুয়া সড়কটি অনেক চওড়া করে পুনর্নির্মাণ করে। যার কারণে সহজেই পৌঁছানো যায় এই স্পটে।
চিওড়া ইউনিয়ণ পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম পর্যটন শিল্পে চিলপাড়া ব্রিজের অপার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বলেন, চলমান ঈদ মৌসুমে প্রতিদিনই হাজার হাজার লোকের সমারোহ ঘটছে চিলপাড়া ব্রিজের আশেপাশে। সরকারি কিংবা বে-সরকারি কোন উদ্যোগের মাধ্যমে এখানে পর্যটন কেন্দ্র কিংবা ভালো কোন স্থাপনা ও আন্তর্জাতিক মানের রেস্টুরেন্ট গড়ে তুললে পাল্টে যেতে পারে এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য। পাশাপাশি দুই উপজেলার সমন্বয়ে নিয়মিত পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হলে মানুষ আরও আকৃষ্ট হবে এই স্থানের প্রতি। এক্ষেত্রে তিনি পর্যটন কর্পোরেশন এবং প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন।
বিডি প্রতিদিন/১ জুলাই ২০১৭/হিমেল