সিদ্ধিরগঞ্জে অবৈধ মশার কয়েল কারখানায় ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার ভোর ৬টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি ধনুহাজী রোড এলাকায় বজলুর রহমানের মালিকানাধীন 'হক এন্ড সন্স' নামের একটি মশার কয়েল কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ফ্যক্টরীটির ৪ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে যায় বলে জানিয়েছে মালিক পক্ষ।
খবর পেয়ে আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে সোয়া ১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অবৈধ গ্যাস সংযোগের ওভারহিটের কারণে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কিছুদিন পূর্বে একই এলাকায় কামাল এবং মাকসুদের মালিকানাধীন মারিয়া প্রডাক্ট নামের মশার কয়েল কারখানায় অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়। আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠা অবৈধ মশার কয়েল কারখানাগুলোতে কয়েকদিন পর পর অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হওয়ায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।
ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসী জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের ধনুহাজী রোডের পার্শ্বে জনৈক বজলুর রহমান হক এন্ড সন্স নামে মশার কয়েল কারখানাটি তৈরী করে। কারখানাটির একটি অংশে খানার ডুলি (রান্নার পাতিল রাখার বক্স) তৈরী করা হয়। মশার কয়েল কারখানাটির কোন কাগজপত্র ফায়ার সার্ভিস কর্মী এবং সাংবাদিকদের দেখাতে পারেনি এর মালিক বজলুর রহমান। দীর্ঘদিন যাবত এ মশার কয়েল কারখানা ও খানা ডুলি কারখানায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে কারখানার মালিকরা কারখানটি চালিয়ে আসছে বলে জানায় এলাকাবাসী। এতে অগ্নিনির্বাপকের কোন ব্যবস্থাও রাখা হয়নি।
ইতিপূর্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত এ কারখানাটি সীলগালা করে দেয়। তবে সীলগালা করলেও বিকল্প পথ দিয়ে কারখানার মালিক কারখানাটি চালু করে। আজ ভোরে মশার কয়েল কারখানার গ্যাসের চুলা থেকে হঠাৎ করে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়। প্রথমে এলাকাবাসী পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে আদমজী ইপিজেড ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। খবর পেয়ে আদমজী ইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মফিজুর রহমান জানায়, ওভারহিটের কারণে কারখানাটিতে আগুন লাগে। এতে তাৎক্ষনিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা সম্ভব হয়নি। তবে মালিকপক্ষ ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের জানায়, অগ্নিকাণ্ডে তাদের ৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোয়া ১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে কারখানার মালিক বজলুর রহমানের নিকট সাংবাদিকরা কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তর ও গ্যাস সংযোগের কাগজ দেখতে চাইলে কারখানার মালিক সাংবাদিকদের সাথে অসাদাচারণ করে।
এলাকাবাসী জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের ধনুহাজী রোডের পাশসহ এ এলাকায় আরো অনেকগুলো মশার কয়েল কারখানা ও খানার ডুলি কারখানা রয়েছে। এ কারখানাগুলোতে বৈধ কোন গ্যাস সংযোগ নেই। ইতিপূর্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও তিতাসগ্যাস কর্তৃপক্ষ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলেও সপ্তাহ না ঘুরতে কারখানাগুলোতে আবার অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে কারখানাগুলো চালু হয়। পুলিশ ও তিতাস গ্যাস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এ কারখানাগুলো দীর্ঘদিন যাবত চালু রয়েছে বলে মালিকরা প্রায় সময় গর্ব করে প্রচার করে থাকে বলে এলাকাবাসী জানায়।
বিডি প্রতিদিন/১৫ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল