গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে মাদারীপুরের শিবচরে ধানসহ শীতের আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমন, বোনা আমন, মাসকলাই, খেসারি,শাক, মূলা, কলা সবজি ছাড়াও আক্রান্ত হয়েছে সামগ্রিক কৃষি খাত। এতে কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা নেমে এসেছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে মাঠে নেমেছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ৩ হাজার ৭শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন, ২ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন, ৫০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি, ১শ’ হেক্টর জমিতে খেসারী, ২শ’ হেক্টর জমিতে মাসকলাই, ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে।
গত কয়েকদিনের টানা অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে সরকারি হিসেবেই প্রায় ২শ’ হেক্টর ধান, ৭১ হেক্টর মাশ কলাই, ১০ হেক্টর শাক সবজি, ২০ হেক্টর খেসারি, ১০ হেক্টর সরিষা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো কয়েকগুন বেশি। টানা বৃষ্টিতে অনেক আধা পাকা পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। নিচু জমির অনেক ধান ও বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ধান পাকার আগ মুহূর্তে বড় ধরনের এ বৃষ্টিতে ধানের পরিপক্কতে চরম বিঘ্ন ঘটলো। অনেকেই আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে। এদিকে শাক সবজি বীজ থেকে গজানোর শুরুতেই বৃষ্টির এ ধাক্কায় আগাম সবজির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরা দাবি করেন। অনেকে যারা আগে ভাগে পেয়াজ রসুন লাগিয়েছেন তারাও ক্ষতির স্বীকার হয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জাহাঙ্গীর মোল্লা বলেন, ক্ষেতের সব ধান পেকে যাওয়ার পর ধান কেটে ঘরে তোলার মুহূর্তেই হঠাৎ কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ ধানই ঝরে পড়েছে। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা দরকার।
আরেক ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জাভেদ বলেন, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ধান, খেসারী, মাসকলাই, শীতকালীন সবজীসহ আমাদের সকল প্রকার ফসলেরই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আগাম লাগানো পেয়াজ ও রসুন ক্ষেতে পানি জমে থাকায় সকল বীজ নষ্ট হয়ে গেছে।
শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম সালাউদ্দিন বলেন, অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের ক্ষতি নিরুপনের চেষ্টা করেছি।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, সম্প্রতি অতিবর্ষণের কারণে ধান ও শীতকালীন শাকসবজীর কিছুটা ক্ষতি সাধন হয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল