পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলার ড্রেজার নেতা হিসেবে খ্যাত এক ইউপি মেম্বার ও আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে নদী কেটে পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে। তিনি শালবাহান ইউয়িনের আওয়ামী কৃষকলীগের সভাপতি এবং একই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য নুর ইসলাম। তাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে নদীর গতি বন্ধ করে খনন করা পুকুরটির পাড় থেকে বালি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সেই সাথে একই সময়ের মধ্যে জমির কাগজ পত্রও দাখিল করতে বলা হয়েছে ।
অভিযোগে জানা গেছে, মাঝিপাড়া এলাকার লোহাকাচি গ্রাম দিয়ে বয়ে যাওয়া ভারত থেকে আগত সীমান্ত নদী ডাহুকের গতি বন্ধ করে ৫০ শতক জমিতে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করছিলেন এই জনপ্রতিনিধি। তারই ছত্র ছায়ায় এলাকার আরও অনেকে ডাহুক নদীর গতি বন্ধকরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করছিলেন। ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর তোলার পর নদীর গতি পরিবর্তনের পাশাপাশি নদীর এই অংশে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। এই গর্তগুলোর পাড় বেধে তিনি চেইন হুইল এক্সকেপিটার মেশিন দিয়ে পকুর খনন করছিলেন।
এর আগে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের অপরাধে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এই আওয়ামী নেতার বিরুদ্ধে চারটা মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাও রয়েছে। তেঁতুলিয়া থানা পুলিশের দায়ের করা এসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হলেও বিপুল অংকের টাকা ব্যায় করে আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। চারটি মামলাই বর্তমানে বিচারধীন রয়েছে ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অভাবের তাড়নায় কয়েক যুগ আগে দক্ষিনবঙ্গ থেকে এসে পরিবার পরিজন নিয়ে এই এলাকায় আবাস গড়েন নুর ইসলাম। এরপর অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করেন তিনি । আস্তে আস্তে ড্রেজার মেশিন পরিচালনার ম্যানেজম্যান হয়ে ওঠেন। সরকারি কর্মকর্তা ও নেতাদের বিপুল অংকের টাকা দিয়ে প্রায় শতাধিক ড্রেজার মেশিনের শেয়ার হোল্ডার বনে যান। রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান তিনি। বিপুল টাকা খরচ করে আওয়ামী লীগের পদ দখল করে জনপ্রতিনিধিও নির্বাচিত হন। জানা গেছে, স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় তিনি নদী কেটে পাথর উত্তোলন এবং পুকুর খননের কাজটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসব অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের খামির উদ্দিন ও আবু জাফর নামের দুই তহশিলদারকে বদলী করা হয়।
গত বুধবার বিকেলে সরেজমিনে নদী কেটে পুকুর খননের খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস। এসময় নুর ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করতাম। ২০০৯ সালে বাদ দিয়েছি । নদীর কিছু অংশ জমি ভুল করে কেটেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস জানান, নদী কেটে পুকুর খননের ব্যাপারে ছাড় দেয়া হবে না। কাগজ পত্র দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার