রোগমুক্তি ও মনোবাসনা পূরণের জন্য পুরাতন বিলের কাদামাটিতে ডুব দেয়া, পানি পান ও নিয়ত করে কাদাপানি শরীরে ছিটিয়ে দিলেই সব আশা পূর্ণ হয়ে যায় এমন গুজবে ময়মনসিংহের ত্রিশালে রামপুর ইউনিয়নের চেচুয়া বিলে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার চেচুয়া বিলের মাঝখানে একশ' মিটার জায়গাজুড়ে থাকা কচুরিপানা হঠাৎ না থাকাকে কেন্দ্র করে এলাকার এক শ্রেণির অসাধু চক্র প্রচার শুরু করে গায়েবি অলৌকিক কোন শক্তি এখানে এসে কচুরি পানা সরিয়ে দিয়েছে। এখানকার পানি পান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হবে এবং সকল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ তাদের রোগী, সন্তান, পায়ে সিকল বাঁধা পাগল, যৌবন ফিরে পাবার আশায় বৃদ্ধ মানুষ কাদাপানিতে ডুব দিয়ে সেই পানি পান করছে আর বোতলে করে পানি নিয়ে যাচ্ছে।
নেত্রকোনার কলমাকান্দার আবুল হোসেন এসেছেন তার প্রতিবন্ধী ছেলেকে ভাল করার জন্য। তিনি শুনেছেন এই কাদাপানিতে ডুব দিলে রোগী ভাল হয়ে যায়। তাই ডুবানোর জন্য নিয়ে এসেছে।
ভালুকার নাজমা বেগম বলেন, শুনেছি এখানে অনেক রোগী ভাল হয়েছে। তাই আমি আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছিলাম জন্ম থেকেই সে প্রতিবন্ধী।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হক বলেন, আমরা গুজব না ছড়ানোর জন্য মাইকিং করেছি মানুষকে সচেতন করছি, কিন্তু এতে কোন কাজ হচ্ছেনা এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক আসছে। যার ফলে বিলের আশেপাশের ফসলের জমি নষ্ট হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ ফসলি জমি নষ্ট করে বিলে ডুব দিতে যাচ্ছে। প্রশাসন তাদের নিভৃত করতে হিমশিম খাচ্ছে।
ত্রিশাল থানার ওসি (তদন্ত) ফায়জুর রহমান জানান, হাজার হাজার মানুষ গুজবে কান দিয়ে বিলের পচা পানিতে ডুব দিচ্ছে। গতকাল থেকে দুদিনে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের আনাগোনায় বিলের সব ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মানুষ ঢল সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মানুষকে গুজবের ব্যপারে সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাকির জানান, প্রশাসনিক ভাবে এটি বন্ধ করতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। নিছক গুজবে কান দিয়ে দূর থেকে আসা মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন