দীর্ঘদিন ধরে সৌদিপ্রবাসী শামীম তালুকদারের বাড়িতে কাজ করতেন তুহিন (৩২) নামের এক যুবক। সেই তুহিনের নেতৃত্বে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয় শামীমের ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তামিমকে। মুক্তিপণ না পেয়ে তামিমকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশটি ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশ তুহিনকে আটক করলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তুহিনসহ আমিরুল নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। শিশু শিক্ষার্থী তামিমের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে স্তম্ভিত ফরিদপুরবাসী। এলাকাবাসী, পুলিশ ও তামিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বড় গোপালদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তামিম তালুকদার (১১) বাড়ির পাশে মাঠে খেলতে গিয়ে গত ১৫ আগস্ট নিখোঁজ হয়। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও তামিম বাড়িতে না আসায় তার মা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তামিমের কোনো সন্ধান পাননি। ১৫ আগস্ট রাতে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা চায় তামিমের মায়ের কাছে। এ নিয়ে অপহরণকারীদের মধ্যে তামিমের পরিবারের কয়েক দফা ফোনে কথা হয়। মুক্তিপণের টাকা না দিলে তামিমকে হত্যার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। এ ঘটনার পর তামিমের পরিবারের পক্ষ থেকে মধুখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তার মধুখালী থানা পুলিশ ১৮ আগস্ট তুহিন শেখকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত সোমবার রাতে মধুখালীর কোরকদি ইউনিয়নের বাঁশপুর এলাকার একটি ডোবা থেকে আর্বজনা দিয়ে ঢেকে রাখা তামিমের লাশটি উদ্ধার করে। তামিম হত্যার সঙ্গে জড়িত আমিরুল (২৫) নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘাতক তুহিনের বাড়ি মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর থানায় ও আমিরুলের বাড়ি মাগুরা জেলার সদর থানায়। তামিমের পরিবারের সদস্যরা জানান, নিখোঁজের পরই ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। টাকা দিতেও চেয়েছিল পরিবার, তার পরও শেষ রক্ষা হয়নি। এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে এলাকাবাসী। মধুখালী থানা পুলিশ বলছে, ঘটনাটি পরিকল্পিত। মুক্তিপণ আদায়ের দাবিতেই অপহরণ করা হয়েছিল শিশুটিকে। মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান জানান, পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত তুহিন শেখকে আটক করে। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক লাশ উদ্ধার করা হয়।