চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরাম এক সপ্তাহের মধ্যে বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ কমানোর আলটিমেটাম দিয়েছে। একই সঙ্গে এর মধ্যে নতুন ট্যারিফ সমস্যার সমাধান না হলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। গতকাল বন্দরের বিভিন্ন সেবায় অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরীর নেভি কনভেনশন হলে আয়োজিত পোর্ট ইউজার্স ফোরামের এক সভা থেকে এ আলটিমেটাম দেওয়া হয়। আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি এস এম আবু তৈয়বের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমিরুল হক, বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি এম এ সালাম, পরিচালক এমডিএম মহিউদ্দিন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম, শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. পারভেজ আকতার প্রমুখ। সভায় বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন। এতে বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়া গত ১৫ অক্টোবর থেকে বন্দরে গড়ে ৪১ শতাংশ চার্জ বাড়ানো হয়েছে। কোনো কোনো খাতে এ চার্জ আরও অনেক বেশি। বন্দরে ট্যারিফ নিয়ে তুঘলকি কাণ্ড ঘটে গেছে। নতুন ট্যারিফে ব্যবসায়ীরা প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর লসে নেই। তাহলে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কেন এত কারসাজি? ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ৮৫ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়। এর মধ্যে ট্রেইলার ধর্মঘট শুরু হয়েছে, আমাদের কনটেইনার যাবে না। এসবের দায়দায়িত্ব কে নেবে?
সভায় পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নতুন ট্যারিফ কাঠামো স্থগিত করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা।
এ সমস্যা সমাধানে যদি সরকার মনোযোগ না দেয় তাহলে ব্যবসায়ীরা আর বেশি দিন অপেক্ষা করবে না। একটা কর্মসূচি আমাদের অবশ্যই দিতে হবে। সেজন্য কর্মসূচি ঘোষণা করছি। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন রবিবার (আজ) থেকে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবে। এ ছাড়া এক সপ্তাহের মধ্যে যদি ট্যারিফের সমাধান না হয়, তাহলে চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এদিকে বন্দরের অস্বাভাবিক ট্যারিফ আরোপের প্রতিবাদে গতকাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সকালে চট্টগ্রামের কদমতলীতে আন্তজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেয়। একই দাবিতে গত ১৫ অক্টোবর থেকে কনটেইনার বহনকারী লরি চলাচল বন্ধ রেখেছেন মালিক-শ্রমিকরা।
এর ফলে বন্দরে ব্যাহত হচ্ছে জাহাজে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ। একই সঙ্গে কনটেইনার খালাস করা পণ্য বন্দরের বাইরে (ডেলিভারি) নিতে পারছেন না আমদানিকারকরা। এ কারণে কনটেইনার জটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে সীমিত আকারে রপ্তানি পণ্য বন্দরে প্রবেশ করছে বলে জানা গেছে।