বরিশালে অনৈতিক সম্পর্কের জের ধরে শ্যালকের স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহসিনুল হক মঙ্গলবার আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডিত আসামি নবকুমার সাহা (৩৮) খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগতি সাহাপাড়া গ্রামের চিত্ত সাহার ছেলে। নবকুমার সাহা বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামে বসবাস করে হারতা বাজারে স্বর্ণকারের কাজ করতো। ২০১০ সালের ৬ জুলাই দিবাগত মধ্যরাতে জামবাড়ি গ্রামে সে তার শ্যালকের স্ত্রী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কল্পনা রাণীকে হত্যা করে।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, উজিরপুরের কাউয়ারেখা গ্রামের সুভাষ হালদারের মেয়ে কল্পনা রাণীকে বিয়ে দেওয়া হয় নবকুমারের শ্যালক মিলন কর্মকারের সঙ্গে। মাটিকাটা শ্রমিক মিলন কর্মকার স্ত্রীকে নিয়ে নবকুমারের জামবাড়ি গ্রামের বাড়িতে থাকতো। কাজের সন্ধানে প্রায়ই অন্যত্র থাকতো মিলন কর্মকার। অপরদিকে নবকুমারের স্ত্রী দিপা সাহা প্রায়ই খুলনায় পিত্রালয়ে বেড়াতে যেত। এ সুযোগে শ্যালকের স্ত্রী কল্পণা রাণীর সঙ্গে নবকুমারের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০১০ সালের ৬ জুলাই নবকুমারে স্ত্রী দিপা সাহা খুলনায় পিত্রালয়ে অবস্থান করছিলো। ৭ মাসের অন্তঃস্বত্তা কল্পনা রাণী পিত্রালয়ে থাকলেও নবকুমার ওইদিন তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এনিয়ে রাতে নবকুমারের সঙ্গে শ্যালক মিলন কর্মকারের ঝগড়া হয়। মিলন ঘুমিয়ে পড়ার পর তার স্ত্রী কল্পনাকে ডেকে বাড়ির দোতালায় নিজকে নিয়ে যায় নবকুমার। ওইদিন অনৈতিক কাজে রাজী না হওয়ায় নবকুমারের নির্যাতনে কল্পণার মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে মিলনকে ভুল বুঝিয়ে কর্মস্থলে পাঠানোর পর কল্পণার মুখে বিষ ঢেলে নবকুমার ডাকচিৎকার করে জানায় যে কল্পনা আত্মহত্যা করেছে। পরবর্তীতে কল্পণার বাবা সুভাষ হালদার হত্যা মামলার দায়ের করলে পুলিশের তদন্তে কল্পনার মৃত্যু রহস্য উদঘাটিত হয়। নবকুমারও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
উজিরপুর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক মো. শামীম শেখ ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর একমাত্র আসামি নবকুমারকে অভিযুক্ত করে আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দেন। পরে ট্রাইব্যুনালে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আসামি নবকুমারকে উল্লেখিত দন্ড দেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার