মুসলমানরা ইসলামি ভ্রাতৃত্বের কথা বিস্মৃত হয়ে প্রতিশোধপরায়ণ ও একে অন্যকে হত্যার নেশায় মেতে ওঠে। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে উষ্ট্রের যুদ্ধ ও ৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে সিফ্ফিনের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। গৃহযুদ্ধে রসুল (সা.) কর্তৃক প্রত্যয়িত তালহা, যুুবাইর ও অনেক বয়োবৃদ্ধ সাহাবাসহ লক্ষাধিক মুসলমান নিহত হন। কার্যত ইসলামি খেলাফত অত্যন্ত দ্রুত সময়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। সিফ্ফিনের যুদ্ধের পর ‘দুমাতুল জানদালে’ ইসলামি খেলাফতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের বৈঠককালে ১২ হাজার সৈন্যের একটি শক্তিশালী বাহিনী খলিফা আলী (রা.)-এর পক্ষ ত্যাগ করে। ইসলামে ‘খারেজি’ নামে উগ্রপন্থি সম্প্রদায়ের উদ্ভব তাদের থেকেই। খারেজি সম্প্রদায় মুসলিম মিল্লাতের জাতীয় শত্র“ হিসেবে হজরত আলী, মুয়াবিয়া ও আমর ইবনুল আস (রা.)-কে চিহ্নিত করে তাঁদের একই দিন ও অভিন্ন সময়ে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মাহে রমজানের ১৫ তারিখ ফজরের নামাজের সময় আক্রমণ পরিচালনা করতে নির্ধারিত হয়। আঁততায়ীরা নির্দিষ্ট সময়ে বয়োবৃদ্ধ তিন সাহাবির ওপর হামলা করে। সৌভাগ্যক্রমে আমর ইবনুল আস (রা.) অসুস্থতার কারণে সেদিন মসজিদেই যাননি। আর মুয়াবিয়া (রা.) আঁততায়ীর আক্রমণে সামান্য আহত হলেও বেঁচে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত হজরত আলী (রা.) ৬৬১ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি শাহাদাতবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। হজরত হাসান ইবনে আলী (রা.) তাঁর জানাজায় ইমামতি করেন এবং কুফা জামে মসজিদের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
আরসান আজাদ