শুধু মনিরামপুর উপজেলা নিয়ে যশোর-৫ আসন গঠিত হলেও ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপি থেকে পাঁচ নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা হলেন- শহিদ মোহাম্মদ ইকবাল, মোহাম্মদ মুছা, মুনীর আহমদ সিদ্দিকী বাচ্চু, ইফতেখার সেলিম অগ্নি ও ব্যারিস্টার মোস্তফা তাজ। আবার বিএনপির জোটে থেকে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আবদুর রশিদ। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী আগেই তাদের জেলা শুরা কর্মপরিষদ সদস্য গাজী এনামুল হককে যশোর-৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে রেখেছে। এই আসনে ভোটার সংখ্যা সাড়ে তিন লাখেরও বেশি। বিগত চারটি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের খান টিপু সুলতান একবার, স্বপন ভট্টাচার্য দুবার সংসদ সদস্য হন। শেষেরবার আওয়ামী লীগেরই আরেক নেতা ইয়াকুব কবীরের কাছে স্বপন ভট্টাচার্য পরাজিত হন। এর আগের নির্বাচনগুলোর মধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস একবার স্বতন্ত্র হিসেবে, একবার জাতীয় পার্টি থেকে এবং আরেকবার চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিএনপি : থেকে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফসার আহমদ সিদ্দিকীও একবার সংসদ সদস্য হন। তবে মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস এবং আফসার আহমদ সিদ্দিকী দুজনেই ইন্তেকাল করেছেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্বপন ভট্টাচার্য, ইয়াকুব কবীরসহ দলের সব নেতাই এখন আত্মগোপনে। পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে তারা থাকছেন না এটা প্রায় নিশ্চিত। এ অবস্থায় বিএনপি থেকে পাঁচ নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সবমিলিয়ে এ আসনের নির্বাচনি হিসাবনিকাশ বেশ খানিকটা জটিল হবে বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা। মণিরামপুরে বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা শহিদ মোহাম্মদ ইকবাল ও মোহাম্মদ মুছাকে স্থানীয়রা ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে দেখেন। তারা দুজনেই এবার মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফসার আহমদ সিদ্দিকীর ছেলে মুনীর আহমদ সিদ্দিকী বাচ্চুও এ আসনে মনোনয়ন চান। তিনি বর্তমানে যশোর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। মনোনয়ন চান সাবেক ছাত্র নেতা ইফতেখার সেলিম অগ্নি। আরও আছেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী, লন্ডন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার মোস্তফা তাজ। জেলা বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, মনোনয়ন পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে মণিরামপুর বিএনপিতে যদি বিভক্তি জোরালো হয়, সেক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ের কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। বিএনপির বিভক্তির এই সুযোগ নিতে পারে জামায়াতও। আবার মণিরামপুরবাসীর মাঝে মরহুম মুফতি ওয়াক্কাস পরিবারের বেশ প্রভাব আছে। সেক্ষেত্রে মুফতি ওয়াক্কাসের ছেলে মাওলানা আবদুর রশিদ বিএনপি জোটের প্রার্থী হলে হিসাব কিছুটা অন্যরকম হবে।