মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলা নিয়ে টাঙ্গাইল-১ আসন গঠিত। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে বিএনপির ছয় নেতা তৎপরতা চালাচ্ছেন। মাঠে-ময়দানে প্রচারণা চালানো এই ছয় নেতা হলেন- দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, প্রাক্তন সংসদ সদস্য সৈয়দা আশিকা আকবরের ছেলে সমাজসেবক আফিফ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট সুরুজ আলী, বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত কর্নেল (অব.) আসাদুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদের ছেলে রিজভী আহমেদ। অন্যদিকে বাকি দলগুলো একক প্রার্থী নিয়ে মাঠে নেমেছে। দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হলেন জেলা শাখার কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মোন্তাজ আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হারুন অর রশীদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃধা, খেলাফত মজলিস জেলার সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক মাওলানা কে এম আনছার আলী। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন সাবেক এমপি ও ডাকসুর সাবেক সদস্য খন্দকার আনোয়ারুল হক।
এ আসনে ১৯৭৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৮ বার, বিএনপি দুবার, জাসদ ও জাতীয় পার্টি (জাপা) একবার করে নির্বাচিত হয়। সর্বশেষ পাঁচবারের এমপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুুর রাজ্জাক বর্তমানে হত্যা ও দুর্নীতি মামলায় কারাগারে আছেন। এই বাস্তবতায় আসনটির দখল পেতে বিএনপিসহ অন্য দলগুলো এরই মধ্যে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় মাঠে রয়েছে। দলগুলো ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, তোরণ ইত্যাদিতে এলাকা ছেয়ে গেছে। পাশাপাশি নেতারা মতবিনিময়, সভা-সমাবেশ, দলীয় তৎপরতা, বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান, ধর্মীয় জলসায় ও দুর্গোৎসবে অনুদান প্রদান করে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন। হোটেল-রেস্তোরাঁ, হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় সংসদ নির্বাচন এখন টক অব দ্য টাউন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই রাষ্ট্রসংস্কারে আমরা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছি। ধনবাড়ী-মধুপুরের জনগণ ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোট দিয়ে ধানের শীষকে জয়ী করবে ইনশাল্লাহ।’
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মোন্তাজ আলী বলেন, ‘বিগত সময়ে এ আসন থেকে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। বর্তমানে মধুপুর এবং ধনবাড়ীতে ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজি চলছে। এসব থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি পেতে চায়। আশা করছি নির্বাচন হলে আমি জয় লাভ করব। তখন সবাইকে নিয়ে সুন্দর একটি মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলা গড়ে তুলব।’
দুটি উপজেলায় দুটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩২ হাজার ২২০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ১২ হাজার ৯৯৬ জন, মহিলা ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ২২২ জন ও হিজড়া ভোটার রয়েছেন দুজন।