জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে দেওয়া রায় কোনও প্রতিশোধ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, এ রায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির প্রতিজ্ঞা পূরণ।
সোমবার ট্রাইব্যুনাল-২ রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
রায়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “আমি মনে করি এই রায় কোনও ধরনের অতীতের প্রতিশোধ নয়। এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির প্রতিজ্ঞা। এটা ন্যায়বিচারের জন্য যাত্রা। এই রায় প্রমাণ করেছে অপরাধী যত বড়ই হোক, যত ক্ষমতাশালীই হোক, সে আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে যত বড় অপরাধী হোক, অপরাধের জন্য তাকে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে, বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এটাও প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক প্রথা, মান বজায় রেখে মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো জটিল অপরাধের বিচার করতে সক্ষম। বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে সেটা করতে পেরেছে।”
রায়ের বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, “যে ধরনের সাক্ষ্য-প্রমাণ এখানে দেখানো হয়েছে, বিশ্বের যেকোনও আদালতের মানে এই সাক্ষ্য-প্রমাণ উতরে যাবে। পৃথিবীর যেকোনও আদালতে এই সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হলে, আজ যেসব আসামিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তারা একই শাস্তি পাবে।”
এ রায়ের ফলে যে এক হাজার ৪০০ তরতাজা তরুণ প্রাণ দেশে স্বৈরশাসন অবসান করার জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের পরিবারে যদি সামান্য একটু স্বস্তি আসে, সেটাই প্রসিকিউশনের প্রাপ্তি বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, “একটি বিচারিক প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করার মাধ্যমে এই জাতিকে বিচারহীনতার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার আমাদের যে ক্ষুদ্র প্রয়াস, সেটা যদি সফল হয়, সেটাই আমাদের সাফল্য।”
বিডি প্রতিদিন/একেএ