পার্বত্যাঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ইউএসএআইডি ও যুক্তরাষ্ট্র বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে, সেগুলোতে এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও সৌন্দর্য্য রক্ষায় গুরুত্ব পাবে। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাসহ সামাজিক বনায়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করা হচ্ছে।
বুধবার বিকাল ৩টায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ব্যাঙছড়ি এলাকায় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ‘অ্যাডাপটিভ এনভায়রনমেন্টাল গভর্নেন্স ফর দি পুওর’ কর্মসূচির আওতায় চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্টস ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট অ্যাকটিভিটি প্রকল্প পরিদর্শন শেষে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ইউএসএআইডি-র মিশন পরিচালক ডেরিক ব্রাউন, রাষ্ট্রদূত মিলার সহ-ধর্মিনী মিশেল এডেলম্যান, বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের প্রেস বিশেষজ্ঞ রিকি সালমিনা, ইউএনডিপির পার্বত্য চট্টগ্রামের সিএইচটিডিএফ প্রকল্পের সমন্বয়নকারী প্রসেনজিৎ চাকমা, ঐশর্য্য খীসা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বন সংরক্ষক সানা উল্ল্যাহ পাটোয়ারীসহ অন্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ব্যাঙছড়ি গ্রামবাসীর পক্ষে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, গ্রামপ্রধান মংসিহ্লা থোয়াই কারবারি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার আরও বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্তির পর এবারই প্রথম পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করছি। সফরের মূল উদ্দেশ্য- জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থার বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকান্ড দেখা এবং অঞ্চলটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করা। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নে ‘চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্টস ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টিভিটি (সিএইচটিডব্লিউসিএ)’ নামে ৬ বছর মেয়াদের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে- যা শেষ হবে চলতি বছরের শেষের দিকে। এতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মাধ্যমে বাংলাদেশের টাকায় ৬৭ দশমিক ২ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে।
প্রকল্পে সহায়তা করছে- বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের সার্বিক উদ্দেশ্য হচ্ছে- পাহাড়ে টেকসই বন ব্যবস্থাপনাকে এগিয়ে নেয়া, জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের টেকসই জীবিকা অর্জনে সহায়তা করা। এসব কার্যক্রমে স্থানীয় কমিউনিটি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন ও জলাভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দেয়া।
তিনি বলেন, প্রকল্পে কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে- বনাঞ্চলের চিহ্নিত জলবিভাজিকা গুলোর কমিউনিটিভিত্তিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, কমিউনিটির যৌথ ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতামূলক পদ্ধতি অনুসরণ করা- যাতে সরকার ও স্থানীয় কমিউনিটিগুলো সহযোগী হিসেবে সমতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে আনতে সংরক্ষিত এলাকা ও তার আশেপাশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জীবিকার মানোন্নয়নসহ তাতে বৈচিত্র্য আনা এবং পাহাড়ের ঢালে টেকসই চাষাবাদ কৌশল গ্রহণের বিষটিকে এগিয়ে নেয়া। আমরা এসব কর্মসূচিকে চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত সম্প্রসারিত করতে চাই।
দূতাবাসের প্রেস বিশেষজ্ঞ রিকি সালমিনা জানান, রাঙামাটিতে দুই দিনের সফরসূচির মধ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) রাঙামাটির বরকল উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় ইউএনডিপি এবং ইউএসএইড বাস্তবায়িত প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন