হাওর ও চা বাগান বেষ্টিত মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলা। উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা ৩১ শয্যা বিশিষ্ট রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু জনবল সংকটে চরম হুমকির মুখে এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা।
মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে চিকিৎসা সেবা অন্যতম। অথচ উপজেলার ৩ লক্ষ মানুষের জন্য সেবার একমাত্র ভরসা এই হাসপতালে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে সরকারি সেবা পেতে হিমহিশ খাচ্ছে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বসবাসকরী সাধারণ মানুষ।
দিনে দিনে কমছে সেবার মান এমন অভিযোগ উপজেলার সাধারণ মানুষের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারদের ১০টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে কাগজে কলমে ৭ জন থাকলেও মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে দুইজন এবং হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে একজন ডেপুটেশনে রয়েছেন।
নার্সদের ১৬টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১০ জন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিজিটাল এক্স-রে, প্যাথলজি মেশিন ও দাঁতের চিকিৎসার সরঞ্জামসহ অনেক কিছু রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনও টেকনোলজিস্ট না থাকার কারণে এগুলোর সেবা দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকি এখানে নেই কোনও ফার্মাসিস্টও।
সরেজমিন দেখা যায়, জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন মো. মিজানুর রহমান নামে এক চিকিৎসক। তিনি সদ্য ডিএমএফ শেষ করে ইন্টার্নি করছেন। আবাসিক মেডিকেল অফিসার বেশির ভাগ সময় বাইরে ফিল্ডের কাজে ও প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত ডাক্তার হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ কাজে ব্যস্ত থাকেন।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা ঘড়গাঁও গ্রামের দিপা বেগম নামে এক তরুণীর কাছে হাসপাতাল থেকে কেমন সেবা পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাইনে অনেক সময় দাঁড়ানোর পর ডাক্তার এক পলক দেখেছেন।
ইনডোরের সেবা নিতে আসা একজন জানান , দিনে একবার এসে ডাক্তার দেখে যান। পরবর্তী সময়ে শরীরে অবনতি হলেও ডাক্তারদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
এ ব্যাপারে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বর্ণালি দাশ বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে, প্যাথলজি মেশিন ও দাঁতের চিকিৎসার সরঞ্জামসহ অনেক কিছুই রয়েছে। কিন্তু টেকনোলজিস্ট না থাকার কারণে এই সেবা দিতে পারছি না আমরা। সীমিত ডাক্তার ও জনবল দিয়ে আমরা সাধ্য মতো চিকিৎসা দিচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম