ফরিদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের ইউনিয়ন সাব সেন্টারগুলো থেকে সেবা বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। সদর উপজেলায় যে কয়টি ইউনিয়ন সাব সেন্টার রয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগগুলোতেই স্বাস্থ্যসেবা নেই বললেই চলে।
কয়েকটি সাব সেন্টার দিনের পর দিন বন্ধ থাকলেও তা দেখার কেউ নেই। এমনকি সাব সেন্টারগুলোতে যারা কর্মরত রয়েছেন তারা ঠিকমতো অফিসে না গিয়ে মাসের পর বেতন তুলে নিচ্ছেন এমন অভিযোগ রয়েছে বিস্তর।
বর্তমান সরকার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেন্টারগুলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিলেও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তা-ব্যক্তিদের নজরদারি না থাকায় ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর সদর উপজেলায় ৪০টি সাব সেন্টার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটিতে সেবা মিললেও বাকিগুলোতে কোনও সেবাই পাচ্ছেন না স্থানীয় দরিদ্র মানুষ।
অভিযোগ রয়েছে, সদরের বিল মাহমুদপুর ইউনিয়ন সাব সেন্টারের উপ-স্বাস্থ্য সহকারী (যিনি কৈজুরি ইউনিয়ন থেকে প্রেষণে বিল মাহমুদপুরে আছেন) ডা. অহিদুর রহমান (প্যারামেডিক্স) দিনের পর দিন কর্মস্থলে যাচ্ছেন না। তারপরও তিনি নিয়মিত বেতন তুলে নিচ্ছেন। প্রতিমাসে একবার গিয়ে খাতায় স্বাক্ষর করে বিল তুলছেন। তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারি কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।
ফজল নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, তিনি এ সাব সেন্টারটিতে অহিদ নামের কোনও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে কখনো দেখেননি।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে তিনি এসব কাজ করলেও তার ভয়ে কেউই মুখ খুলতে সাহস পায় না।
কৈজুরি ইউনিয়নের মঙ্গলকোর্ট সাব সেন্টারটি বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এই সেন্টারটির ভবনটি এখন প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সরকারের তরফ থেকে দেখভাল না থাকায় সেটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আক্কাস প্রামাণিক নিজ উদ্যোগে ভবনটির দরজা-জানালা ঠিক করে দিয়েছেন সম্প্রতি।
বিভিন্ন ইউনিয়নে থাকা সাব সেন্টারগুলোর বিষয়ে স্থানীয়রা সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ দিলেও কোনও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
সদরের নর্থচ্যানেল, ডিক্রিরচর, কানাইপুর, মাচ্চর, চাঁদপুর, ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সাব সেন্টারগুলোর অবস্থাও বেশ শোচনীয়। এসব সেন্টারে নামমাত্র চিকিৎসা সেবা পেলেও বেশির ভাগ দিনই সেন্টারগুলো বন্ধ থাকে এমন অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া এসব সেন্টারের দায়িত্বে থাকা লোকজন ঠিকমতো সেখানে বসেন না।
ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু জাহের জানান, যারা নিয়মিত ইউনিয়ন সাব সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন না তাদের নামের তালিকা সংগ্রহ করার কাজ চলছে। যারা সাব সেন্টারগুলোতে যাবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম