অকাল বৃষ্টিতে উপকূলীয় এলাকায় রবিশস্যের ক্ষেতে পানি জমে আছে। ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার হাজারো কৃষক। তরমুজের পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমী ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। পচে গেছে ডাল ক্ষেত। এছাড়া অনেক তরমুজ চাষীরা নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। অকালের ঝড়োহাওয়া আর ভারি বৃষ্টির কারনে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হঠাৎ করে দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে প্রান্তিক, ক্ষুদ্র,মাঝারি ও বড় সকল শ্রেণির কৃষক ক্ষতির কবলে পড়েছেন। তাদের স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। মাঠে এখন শুধুই পানি আর পানি। কেউ কেউ ক্ষেত থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ পানি দ্রুত শুকিয়ে নেয়ার জন্য ক্ষেতে লাইন কেটে পাশের খালের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছেন। কেউ বা আবার নতুন করে ক্ষেতে বীজ বপন করেছে। এ চিত্র ছিল সর্বত্র।
কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যমতে,এ উপজেলার ১৬ হাজার ৭০০ কৃষক বৃষ্টিতে অপুরনীয় ক্ষতির শিকার হয়েছেন। অন্তত ১৭ হাজার দুই শ’ ৯০ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ডালজাতীয় খেসারীর ছয় হাজার এক শ’ ৭৫ একর আবাদী জমির শতকরা ৪০ ভাগ সম্পুর্ণভাবে নষ্ট হয়েছে। একই ভাবে পাঁচ হাজার পাঁচ শ’ ৫৭ একর তরমুজ ক্ষেতের ৬০ ভাগ, মুগডালের চার হাজার ৮১৬ একর আবাদি জমির অর্ধেকটা, ফেলন ডালের সাত হাজার ২৮৬ একর আবাদী জমির ৩০ ভাগ সম্পুর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। একই ভাবে মরিচ, চিনাবাদাম, মিষ্টি আলু, সূর্যমূখী ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বৃষ্টিতে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গামইরতলা গ্রামে কৃষক নাসির উদ্দিন জানান, সে ৪ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছে। এতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। অকাল বৃষ্টিতে তার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এখন গাছ যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য ঔষধ দিচ্ছি।
ধানখালীর লোন্দা গ্রামের কৃষক মো.অহিদুল জানান, এ বছর তিনি এক একর জমিতে তরমুজ আবাদ করেছেন। এ পর্যন্ত তার প্রায় ২০ শতাংশ তরমুজের ক্ষতি হয়েছে। দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
অপর কৃষক আলামিন খাঁন বলেন, তার ক্ষেতে তরমুজের ফলন বেশ হয়ে ছিল। হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে তরমুজ ক্ষেত। লোকসানের দুশ্চিন্তায় পরেছে তিনি। নীলগঞ্জের সবজি চাষী সুলতান গাজী জানান, মরিচ, চিচিঙ্গা, চালকুমড়া,পুঁইশাক জাতীয় শস্য ও শাকসবজির বীজতলা করেছেন তা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
ধুলাসার ইউপি চেয়াম্যান মো.আবদুল জলিল আকন জানান, কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে তা খুবই হতাশাজনক। তরমুজ ছাড়াও খেসারী.মুগডাল,মরিচের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মন্নান জানান, বৃষ্টি অব্যহত থাকলে আরো রবি শষ্য নষ্ট হওয়ার শংঙ্খ ছিলো। বিষয়টি দেখার জন্য প্রত্যেক উপ-সহকারী কৃষি অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর