ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত (নৌকা) প্রার্থী এমাদুল হক মনির এবং স্বতন্ত্র বিদ্রাহী প্রার্থী (কাপ-প্রিচ) বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সিকদারের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় মামলা ও সংর্ঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ৩৫ জন আহত হয়েছে।
হামলায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যন গোলাম কিবরিয়া সিকদার, বড় ভাই সদর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম কবির সিকদার, তাদের সমর্থক শিল্পপতি কৌশিক সেন, নৌকার সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জিসান সিকদারসহ উপভয় পক্ষের ৩৫জন আহত হয়েছে।
সময় বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা হামলা চালিয়ে কিবরিয়া সিকদারের তালতলা বাজারের নির্বাচনীয় কার্যালয়, বর্তমান চেয়ারম্যন কিবরিয়া সিকদার তার সমর্থক শিল্পপতি কৌসিক সেনের দু‘টি প্রাইভেটকার, বাসার জানলা-গ্লাসসহ কয়েকটি মটরসাইকেল ভাংচুর করে। পরিস্থিতি প্রতিকূলে গেলে কিবরিয়া সিকদার তার নেতা-কর্মীদের নিয়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে নৌকার সমর্থকরা তাদেরকে কয়েক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জুড়ে উত্তেজনা ও আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে থানা পুলিশ পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়। পরে ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(কাঠালিয়া-রাজাপুর সার্কেল) মো. মোজাম্মেল হক রেজা এবং ইউএনও আকন্দ মোহম্মদ ফয়সাল উদ্দীন ঘটনাস্থল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে বরিশাল র্যাব-৮ সদস্যরা কিবরিয়া সিকদারকে উদ্ধার করে তার বাসায় পৌছে দেয়।
এদিকে নেতা-কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে রাত ৯টার দিকে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা। মিছিলটি বন্দরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে থানা মোড়স্থ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান কার্যালয়টি তারা দখলে নেয়। সরকার সমর্থিত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাথে চেষ্টা করেও কোন মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যপারে আওয়ামীলীগের প্রার্থী এমাদুল হক মনির বলেন, তারা ঐ স্থানে বিরোধীয় জায়গায় তাদের নির্বাচনী কার্যালয় করতে আসলে স্থানীয়রা তাদের প্রতিহত করেছে।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সিকদার জানান, তিনি তার সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী কার্যলয় উদ্ধোধন করতে আসলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকরা তাদের উপর হামলা করে অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের দুটি প্রাইভেট গাড়ি ও অনেকগুলি মটর সাইকেল ভাংচুর করে মনিরের সমর্থকরা। তার আহত সমর্থকরা কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারছেন না বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও জানান তাদের উপর হামলা করে তাদেরকেই মামলায় ফাসানো হয়েছে। অথচ তাদের মামলাটি পুলিশ রেকর্ড করছেনা।
কাঠালিয়া থানা ওসি (তদন্ত) আঃ সালম জানান, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থীদের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে অন্তত ৯জন আহত হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতা কর্তৃক অবরুদ্ধ কিবরিয়া সিকদারের লোজনকে উদ্ধার করে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। এ ঘটনায় থানায় কোন মামলা হয়নি। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে দুটি মামলায় (নং ৮ও ৯) রেকর্ড করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর