মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার উত্তর সীমান্তে কবিরাজপুর ইউনিয়নের পান্থাপাড়া গ্রামে সেতু (১০) নামের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শরীরের ঘাড়, কনুই, হাতসহ ১৩টি স্থানে গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দিয়ে দগ্ধ করেছে সৎ মা সাবিনা ও সৎ ভাই ছাব্বির। এ ঘনটায় আজ দুপুরে সৎ মা ও ভাইকে আটক করেছে রাজৈর থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৪ মার্চ সকালে স্কুলছাত্রীর বাবা রিয়াজ শিকদার প্রতিদিনের মত পান্থাপাড়া বাজারে ভাঙ্গারীর দোকানে চলে যায় কাজ করার জন্য। এ সুযোগে ছোট এ শিশুটির কোমল শরীরের ঘাড়, কনুই, হাতসহ ১৩টি স্থানে গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দিয়ে দগ্ধ করে সৎ মা সাবিনা ও সৎ ভাই ছাব্বির। এ ঘটনার কথা তার বাবাসহ বাড়ির কারো কাছে বললে বাড়ি থেকে বের করে দিবে বলেও হুমকি দেয়া হয় সেতুকে। এ ভয়ে সেতু কাউকে কিছু না বলে বাড়িতে চুপ করে থাকে।
আজ রবিবারে দগদগে ঘা নিয়ে ঘর থেকে বাহিরে গেলে আশপাশের লোকজন দেখে সেতুকে উদ্ধার করে পাশের কালামৃধা বাজারে নিয়ে গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করান এলাকাবাসী। এবং বিষয়টি পুলিশকে জানালে রাজৈর থানা পুলিশ গিয়ে সৎ মা সাবিনা বেগম ও ভাই ছাব্বিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। সেতু রাজৈর উপজেলা সীমান্ত পাশ্ববর্তী ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।
ছাত্রী সেতু জানায়, প্রায় ৯ বছর পুর্বে আমার মা রেহানা বেগম মারা যায়। মা জীবিত থাকতেই বাবা পুনরায় সৎ মা সাবিনা বেগমকে বিবাহ করে। এরপরেই আমাদের উপর নেমে আসে নির্যাতন। সৎ ভাই ছাব্বির (১৭) ও সৎ নানীর প্ররোচনায় সৎ মা সাবিনা গরম খুন্তি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানের ছেঁকা দেয় । আমি যন্ত্রণায় চিৎকার করলেও তাদের মায়া হয়নি। এসময় সৎভাই আমার হাত চেপে ধরে। আমাকে চিকিৎসা পর্যন্ত দেয়নি। আমি কারও কাছে অভিযোগ করলে আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দিয়েছে। তাই কাউকে কিছু বলিনি।
রাজৈর থানার এসআই খান মো. জোবায়ের জানান, খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে রাজৈর হাসপাতালে ভর্তি করি এবং সৎ ভাই ছাব্বির ও সৎ মা সাবিনাকে আটক করে থানা নিয়ে আসি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহানা নাসরিন জানান, মেয়েটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজৈর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটি পুনর্বাসনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার