মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ বছর ধরে জোড়া তালি দিয়ে একজন শিক্ষক দ্বারা চলছে ছয়টি শ্রেণির পাঠদান। যার ফলে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বিদ্যালয়ে পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
রাজনগর উপজেলার হাওর কাউয়াদীঘির পূর্বাঞ্চলে আবস্থিত শাহাবাজপুর গ্রাম। হাওর অধুষ্যিত এই গ্রামটি উপজেলার অন্যান্য এলাকার তুলনায় শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। গ্রামের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে একজন মাত্র শিক্ষক দ্বারা পাঠদান পরিচালিত হচ্ছে। এদিকে বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ১২০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। প্রায় একই চিত্র পাশের গ্রামের ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানেও একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, হাওরপাড়ের অন্যান্য গ্রামগুলোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সময়মতো বিদ্যালয়ে আসেন না। অনেকেই ছুটি না নিয়ে অনুপস্থিত থাকছেন।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, অনেক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী আমাদের এলাকার বিদ্যালয় থেকে কম কিন্তু শিক্ষক পর্যাপ্ত রয়েছেন। হাওর অধুষ্যিত গ্রামগুলো উপজেলার অন্যান্য এলাকার তুলনায় শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে। বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষকও নেই। এতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা প্রকৃত শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ক্লাস না হওয়াতে অনেক সময় ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়ে যেতে চায় না।
শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যোগময় চক্রবর্তী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি একাই বিদ্যালয়ের পাঠদান চালাচ্ছেন। তিনি ৬টি ক্লাস চালাতে অনেক হিমশিম খাচ্ছেন। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক দেয়ার জন্য তিনি একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক আবেদন করলেও এর সুরাহা হচ্ছে না।
ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সাইদুর রহমান বলেন, আমরা দু’জন শিক্ষক অনেক কষ্ট করে পাঠদান করাচ্ছি।
রাজনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাফর আল সাদিক দুই স্কুলে শিক্ষক সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুর্গম এলাকায় শিক্ষক যেতে চান না, আমরা প্রতি মাসে শিক্ষক সংকটের কাথা উর্ধ্বতন অফিসে জানাচ্ছি। নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিলে আশা করছি সেখানে শিক্ষক দেওয়া হবে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মালেকা পারভীন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খুব শীঘ্র আমরা সেখানে দুটি স্কুলেই শিক্ষক দেয়ার চেষ্টা করবো।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা