মাদারীপুর সদর হাসপাতালে বুধবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে এক গৃহবধূর লাশ ফেলে পালিয়েছে এক ভ্যানচালক। পরে বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে গৃহবধূর পরিবার লোকজন এসে দাবি করেছে তাকে পরিকল্পিতভাবে কেউ হত্যা করে রেখে যায়।
পারিবারিক, স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকার ওয়াহেদ আলী সরদারের ছেলে মাসুদ সরদারের সাথে মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের মাটিভাঙ্গা এলাকার মো. শাহ আলমের মেয়ে মুক্তা বেগমের (২৫) সাথে প্রায় তিন মাস আগে পরিবারের অজান্তে গোপনে বিয়ে করেন। মুক্তা ৫ বছরের মেয়ে সন্তানসহ প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়েই দ্বিতীয় স্বামী মাসুদ সরদারকে বিয়ে করেন। এতে করে মুক্তার বাবা-মা তার দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নেয়নি। ফলে তিন মাস ধরে মুক্তা তার দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি কাটিয়েছে। ঘটনার দিন রাতে তার এক আত্মীয় মাদারীপুর সদর উপজেলার শহরের কুকরাইল এলাকায় আফজাল হোসেনের বাড়িতে ছিলো। ওই বাড়ির একটি রুমে মুক্তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় ওই বাড়ির লোকজনসহ প্রতিবেশীরা।
এসময় তারা গুরুতর অবস্থায় মুক্তাকে উদ্ধার করে একটি ভ্যানগাড়িতে করে হাসপাতালে পাঠায়। মুক্তা মারা গেছে বুঝতে পরে ভ্যানচালক হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। বুধবার রাতেই সদর হাসপাতালের ডা. মো. মফিজুল ইসলাম এক চিঠির মাধ্যমে সদর থানার ওসিকে লাশের বিষয়টি অবগত করেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে পাঠায়।
মুক্তা বেগমের কয়েকজন আত্মীয় জানায়, মুক্তার বিষয়টি মিমাংসার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে নিহত মুক্তার বাবা মো. শাহ আলম বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। কারণ লাশের গায়ে কিছু আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। আমার মেয়েকে কেউ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার এসআই শ্যামল ঘোষ বলেন, হাসপাতাল থেকে থানায় খবর দেয়া হয় একটি মেয়ের লাশ হাসপাতালে রেখে গেছে এক ভ্যানচালক। পরবর্তীতে আমরা হাসপাতালে গিয়ে লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করি।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মাঝে মধ্যেই মাদারীপুর শহরের কুকরাইল এলাকায় তাদের দুসম্পর্কের আত্মীয় আফজাল হোসেনের বাড়িতে আসতো ওই মহিলা। সেখানে রাতে গলায় ফাঁস দিলে স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ডাক্তার দেখে মহিলা মারা গেছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার