আগামী সোমবার (২৪ জুন) বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। জেলায় আনন্দ উৎসবের মধ্যে দিয়ে ভোটগ্রহণ করার সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে প্রশাসন।
বগুড়ায় আগামী সোমবার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর যানবাহন চলাচলে শিথিল করা হয়ছে। এবারই প্রথম ইভিএম এ ভোট প্রদান করতে যাচ্ছে বগুড়া (৬) সদরের ভোটারগণ।
বগুড়া-৬ আসনে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। অতীতের সকল রেকর্ড অনুযায়ী বিএনপির পাল্লাই ভারী।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা হলেন বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ (ধানের শীষ), জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এসএম টি জামান নিকেতা (নৌকা), জাতীয় পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ওমর (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের জেলা আহ্বায়ক ডক্টর মনসুর রহমান (ডাব), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মুফতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম (হারিকেন), স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু (ট্রাক) ও মালয়েশিয়া প্রবাসী মিনহাজ মন্ডল (আপেল)।
এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিঠু গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তার নাম ও প্রতীক থাকবে ব্যালট পেপারে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বগুড়া পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ড এর মধ্যে ২০টি ওয়ার্ড (একটি ওয়ার্ড বগুড়া-৭ আসনের শাজাহানপুর উপজেলার আওতাভুক্ত) এবং সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে বগুড়া-৬ (সদর) আসন।
এই আসনে বর্তমানে ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ৬৬৮ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯০জন। তারা ২৪ জুন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৪১ টি কেন্দ্রের ৯৬৫টি কক্ষে ইভিএমে ভোট দিবেন।
সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মহাজোটের পক্ষে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল জাতীয় পার্টির জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম ওমরকে। তিনি বিএনপি প্রার্থী ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
৩০ ডিসেম্বরের ওই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রাপ্ত ভোট ২ লাখ ৭ হাজার এবং মহাজোট প্রার্থী নূরুল ইসলাম ওমর পায় ৪০ হাজার ভোট। পরে এই আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসনটি ছেড়ে দিলে বা শপথ না নেওয়ায় শূন্য হয়ে যায়। শূন্য হয়ে যাওয়ার কারণে ২৪ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
১৯৯১ সালের ৫ম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী অ্যাড. (মরহুম) মজিবর রহমান, ১৯৯৬ সালের ১২জুন ৬ষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ২০০১ সালের ১ লা অক্টোবর ৮ম সংসদ নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া ও ২০০৮ সালের ৯ম সংসদ নির্বাচনেও বেগম খালেদা জিয়া বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এমনিভাবে বিগত প্রতিটি উপ-নির্বাচনেও ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে। প্রায় ৩০ বছরেও বগুড়া-৬ আসনে কোন আসন পায়নি আওয়ামী লীগ। এসময়ের মধ্যে একবার শুধু জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর সংসদ সদস্য হয়েছেন।
এদিকে ইভিএমে ভোট দিতে ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। এটাকে নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছতার সাথে সহজ পদ্ধতি বললেও ভোটারদের ফলাফল নিয়ে সন্দেহ দূর হচ্ছে না।
বগুড়া-৬ আসনের বিএনপির প্রার্থী গোলাম মো. সিরাজ বলেছেন, সরকার ইভিএম পদ্ধতি জায়েজ করতে ভোট সুষ্ঠু করবে বলে আশা করছি। কারণ একটি সিট তাদের দরকার নেই। বগুড়া সদর আসনটিতে স্বচ্ছ ভোট অনুষ্ঠিত করে প্রচারণা চালানো হবে ইভিএম এ ভোট হয়েও বিএনপি প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
নির্বাচিত হলে সংসদে গিয়ে উচ্চ কণ্ঠে গোলাম মো. সিরাজ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ বগুড়ার উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবেন বলে জানান।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী টি জামান নিকেতা বলেছেন, বগুড়ার উন্নয়নের জন্য নৌকা মার্কা বিজয়ী করতে হবে। বগুড়ার উন্নয়ন চাইলে নৌকার বিজয়ের কোন বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের প্রধান ইস্যু বগুড়ার উন্নয়ন। আমরা চাই বগুড়াবাসির উন্নয়ন। নৌকা মার্কায় ভোট দিন উন্নয়ন বুঝে নিন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন