২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সময়কালে বৈশ্বিক পোশাক আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রে ৭.০৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যার মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩১.৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৫৩ বিলিয়ন ডলারে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১.৬০ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। তবে মূল্যপ্রতি ইউনিট বা প্রতি পিস পোশাকের গড় দাম কমেছে বেশিরভাগ দেশের, যা উদ্বেগজনক।
প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলোর পারফরম্যান্স (মূল্য অনুযায়ী) : বাংলাদেশ ২১.৬০% প্রবৃদ্ধি; ভারত ১৬.৯৬% প্রবৃদ্ধি; পাকিস্তান ২১.৫৮% প্রবৃদ্ধি; ইন্দোনেশিয়া ১৩.৫৫% প্রবৃদ্ধি; কম্বোডিয়া ১৭.৬৫% প্রবৃদ্ধি; ভিয়েতনাম ১৬.৩৩% প্রবৃদ্ধি; চীন নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি -১০.০২%।
পরিমাণ অনুযায়ী (পিসে) রপ্তানির পরিবর্তন : বাংলাদেশ ২১.০৩% বৃদ্ধি; ভিয়েতনাম ১২.৪৩% বৃদ্ধি; ভারত ১৬.৮৩% বৃদ্ধি; কম্বোডিয়া ২২.৮০% বৃদ্ধি; পাকিস্তান ২৫.৬৫% বৃদ্ধি; চীন কমেছে -৯.১৮%।
প্রতি পিস পোশাকের গড় দাম : বাংলাদেশ ০.৪৭% বৃদ্ধি; ভারত ০.১১% বৃদ্ধি; ভিয়েতনাম ৩.৪৭% বৃদ্ধি; চীন ০.৯৩% হ্রাস; কম্বোডিয়া ৪.১৯% হ্রাস; পাকিস্তান ৩.২৪% হ্রাস।
ভিয়েতনামের ব্যতিক্রমী সাফল্য :
এই সময়ে ভিয়েতনামই একমাত্র দেশ যারা মূল্য, পরিমাণ ও গড় ইউনিট দামে একযোগে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে। এটি প্রমাণ করে যে, মানসম্পন্ন ও উচ্চমূল্যের পোশাক সরবরাহে তারা মার্কিন বাজারে নিজেদের আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের জন্য সুযোগ ও সতর্কতা :
বাংলাদেশের রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হলেও, প্রতি পিস পোশাকের গড় দামের অগ্রগতি মাত্র ০.৪৭ শতাংশ। মূল্য প্রতিযোগিতার এই বাজারে টিকে থাকতে হলে এখন প্রয়োজন আরও উচ্চমূল্য সংযোজন, পণ্যের বৈচিত্র্য এবং প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন।
দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে ভালো করছে, তবে গড় দাম কমে যাওয়ার প্রবণতা তাদের লাভজনকতা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে। এখন সময় মান-নির্ভর রপ্তানি বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দেওয়ার।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ