রোগীদের জিম্মি করে কয়েক গুণ ভাড়া বেশি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কর্মরত অ্যাম্বুলেন্স চালক জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শরীয়তপুর সিভিল সার্জন বরাবর গত ২২ সেপ্টেম্বর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ব্যক্তি। অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করার জন্য ৩ সদস্য একটি টিম গঠন করে দিয়েছে নডাক্তার সিভিল সার্জন। কিন্তু ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কোন প্রতিবেদন দেয়নি তদন্ত কর্মকর্তরা। তবে রির্পোট পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ডাক্তার সিভিল সার্জন।
অভিযোগ ও রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কোন রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়ার জন্য সদর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন হলে চালক জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স স্টক থাকলেও তার সাথে যোগাযোগ করলে গাড়ি নেই, দূরে আছে বলে নানা তাল বাহানা শুরু করেন। পরে গাড়ি যোগাড় করে দিবে বলে কয়েক গুণ ভাড়া বেশি লাগবে বলে দাবি করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শরীয়তপুরে আসা অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সঙ্গে যোগসাজশেও বেশি ভাড়া আদায় করে জাহাঙ্গীর তার ভাগ নিচ্ছন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন রোগীর স্বজনরা তথা শরীয়তপুরবাসী।
অভিযোগকারী মো. মানিক মোল্যা জানান, গত ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তার ভগ্নিপতি মো. ইউনুস বেপারীকে মুমূর্ষু অবস্থায় শরীয়তপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। এমতাবস্থায় সদর হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজ নেয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি। পরে হাসপাতালেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি গাড়ি পাওয়া যায়। চালককে ভাড়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে জাহাঙ্গীরের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তার সাথে যোগাযোগ করলে নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দাবি করেন। পরে দুই ঘণ্টা দেরি করে বেশি ভাড়ায় মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয় ইউনুস বেপারীকে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, হাসপাতালের রোগীদের জিম্মি করে পাঁচগুণ ভাড়া বেশি নিচ্ছেন জাহাঙ্গীর। এর প্রতিবাদ করলে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন তিনি।
তবে নিজের বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কর্মরত অ্যাম্বুলেন্স চালক জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
শরীয়তপুর সিভিল সার্জন ডা. খলিলুর রহমান বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চালক জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনির আহম্মেদ খানকে সভাপতি করে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমন কুমার পোদ্দার ও শরীয়তপুর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দা শাহিনুর নাজিয়াকে সদস্য করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে অভিযোগ প্রমাণ হলে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব