বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বলেশ্বর নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর সিদ্দিকুর রহমান (৩০) নামের এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে বিহঙ্গদ্বীপের উত্তর পাশের ধানসীর মধ্য থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তার মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহত সিদ্দিকুর রহমান উপজেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের বড়টেংড়া হাজিরখাল এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের বড় ছেলে। তার ৯ ও ২ বছর বয়সী দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
সিদ্দিকুর রহমান গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে প্রতিদিনের মতো বলেশ্বর নদীতে মাছ ধরতে যান। তবে পরদিন সকালে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তার স্ত্রী মনিরা আক্তার জানান, রাতের কোনো এক সময় সিদ্দিকুরের ট্রলারসহ নিখোঁজ হন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে নদীতে তার ডুবন্ত নৌকা খুঁজে পাওয়া গেলেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক গরুর খাবারের জন্য ধানসি কাটতে গিয়ে বিহঙ্গদ্বীপের উত্তরে ধানক্ষেতে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয় এক জেলে রুবেল মরদেহটি সিদ্দিকুর রহমানের বলে শনাক্ত করেন এবং ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।
পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন লিডার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকেই আমরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিলাম। অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
নিহতের স্ত্রী মনিরা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সিদ্দিকুর ছিলেন আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ছোট দুটি মেয়ে, আর দুইজন ভাই- এখন আমরা কীভাবে চলবো?’
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ‘গত দুই দিন ধরেই আবহাওয়া খারাপ ছিল, নদীতে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত চলছিল। উত্তাল নদীতে ট্রলার ডুবে গিয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আমরা পরিবারটির পাশে থাকার চেষ্টা করছি।’
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজের পর থেকেই আমরা পরিবারটির খোঁজ রাখছিলাম। প্রাথমিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থাও করা হবে।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ