বগুড়ার শেরপুরে ঘনকুয়াশা আর প্রচণ্ড শীতে বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। গত কয়েকদিন সূর্যের আলো না পাওয়ায় বীজতলা রোগাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও তৎপর রয়েছেন। ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে যাতে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য বীজতলা রক্ষায় কৃষককে করণীয় সম্পর্কে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি কৃষি বিভাগের।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ২০ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য ১ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এরইমধ্যে বীজতলায় চারা বাড়তে শুরু করেছে। চলতি জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে জমিতে এই চারা রোপণ শুরু হবে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে বীজতলা নিয়ে কৃষক শঙ্কায় পড়েছেন।
সরেজমিনে গেলে কথা হয় শাহবন্দেগী ইউনিয়নের সাধুবাড়ী গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানীর সঙ্গে। তিনি জানান, এবার পনের বিঘা জমিতে বোরো চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলার চারাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই চারা রক্ষায় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শে হলুদ হয়ে যাওয়া বীজতলায় বালাইনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু তেমন কোন কাজই হচ্ছে না। তবে চারা উৎপাদনে ঠিকই খরচ হচ্ছে। এরপরও বীজতলার চারা রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
তিনি বলেন, চারা নষ্ট হয়ে গেলে বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
একই গ্রামের কৃষক ফজলুল করিম, আইয়ুব আলী, মামুরশাহী গ্রামের সোহেল হাজী, ইব্রাহীম হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এখন বীজতলার চারাগুলো জমিতে রোপণের সময় হয়ে গেছে। কিন্তু শৈত্যপ্রবাহের প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে বীজতলা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা। কারণ এই মুহূর্তে বীজতলা নষ্ট হলে তা ক্রয় করে রোপণ করা সম্ভব নয়।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, শীত ও কুয়াশার কারণে কিছু বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে অতিরিক্ত বীজতলায় চারা উৎপাদনের কারণে তেমন সমস্যা হবে না। এছাড়া এ অবস্থা বেশি সময় থাকবে না। রোদ উঠলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এরপরও তার দফতরের কর্মকর্তারা তৎপর রয়েছেন। এই আবহাওয়ায় করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তাই বীজতলা নিয়ে কৃষকদের শঙ্কার কোন কারণ নেই বলে দাবি করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল