প্রবাসী ফুটবলাররা জাতীয় দলে যোগ দেওয়ায় ফুটবল ঘিরে উন্মাদনা বেড়েছে। হামজা দেওয়ান চৌধুরী, সামিত সোম, ফাহামিদুল ইসলাম লাল-সবুজের জার্সিতে মাঠে নামায় গ্যালারিতে দর্শকের ঢল নেমেছে। যে বাংলাদেশের কোনো পাত্তা ছিল না, সেখানে নতুনত্ব এসেছে। মনে হচ্ছে ফুটবলে জনপ্রিয়তা ফিরে এসেছে। এমন উন্মাদনার মধ্যে আক্ষেপও রয়েছে। কেননা হামজা, সামিত ও ফাহামিদুলরা মাঠে নামার পর জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। অবশ্য ভারতের বিপক্ষে শুধু হামজাই খেলেছিলেন। ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ১-২ গোলে হেরে গেছে। হংকংয়ের বিপক্ষে কিউবা মিচেল খেলবেন তা নিশ্চিত।
আশা ছিল হামজারা খেলায় ৪৫ বছর পর বাংলাদেশ এশিয়ান কাপ ফুটবলে চূড়ান্ত পর্বে খেলবে। সম্ভাবনা এখনো ভালোভাবেই রয়েছে। হংকংয়ের বিপক্ষে দুই, ভারত ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ বাকি। হংকং ও সিঙ্গাপুর ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের ১ পয়েন্ট। এ অবস্থাতেও বাংলাদেশের শীর্ষে ওঠাটা আহামরি কিছু নয়। কিন্তু জিততে তো হবে। এর চেয়ে ট্র্যাজেডি আর কী হতে পারে। হামজা, সামিত, ফাহামিদুলদের মতো উন্নতমানের খেলোয়াড় থাকার পরও জয় পাওয়া নিশ্চিত নয়। হামজারা তো তাদের সেরাটা দিচ্ছেন। যদি বলি ১১ জনের দল হলেও আসল খেলাটা খেলছেন তারাই। ফরমেশন ঠিক না থাকায় দল গুছিয়ে খেলতে পারছে না। প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও ছক এঁকে খেলতে পারছে না। এর দায়ভার হেড কোচের ওপর পড়ে। একটা কথা না বললেই নয়, বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার আগে হাভিয়ের কাবরেরার কোচিংয়ে কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না। এমনকি ক্লাব পর্যায়েও না।
কাজী সালাউদ্দিন আমলেই তিনি চুক্তিবদ্ধ হন। এতদিন না হয় মানহীন দলের কোচ ছিলেন বলে তাঁকে নিয়ে কথা ওঠেনি। কিন্তু হামজা, সামিত, ফাহামিদুল বা কিউবা মিচেলের মতো মানসম্পন্ন ফুটবলারের কোচ কি তাঁকে মানায়? এখানে বরং কাবরেরারই শেখার আছে। তাই তো ক্ষোভে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহিন কাবরেরার পদত্যাগ দাবি করেছেন। এ নিয়ে তিনি এখন বিপাকে রয়েছেন। কেননা সংবাদ সম্মেলনে এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাফুফের বেশ কজন সদস্য সংবাদ সম্মেলনের পর আড়ালেই বলেছেন, এশিয়া কাপ বাছাই পর্বের পরবর্তী ম্যাচের আগেই তাঁকে বদল করা দরকার। হংকংয়ের সঙ্গে খেলতে তিন মাস বাকি আছে। বিশ্বাস করি, উন্নতমানের কোচ আনলে বাকি চার ম্যাচে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। শুধু কাবরেরা নন, পুরো কোচিং স্টাফের পরিবর্তন চান তাঁরা। বিশেষ করে ম্যানেজার পদে সাবেক কোনো তারকাকে রাখার তাগাদা দিয়েছেন। এখন অধিকাংশ সদস্য যদি পরিবর্তন চান তাহলে তো সভাপতিকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। আবার এত দ্রুত ভালো মানের কোচ পাওয়া যাবে কি না সেটাই প্রশ্ন।