চলন্ত বাসে অচেতন অবস্থায় মেয়েকে ফেলে টাকা পয়সা নিয়ে চম্পট দিয়েছে এক সৎ বাবা। অচেতন অবস্থায় মির্জাপুর উপজেলার বাশতৈল পশ্চিমপাড়া ধানক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই মেয়ের নাম রিফা (২৫)। সৎ বাবার নাম আলমগীর হোসেন। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার শহরতলীতে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রিফার মা মারা যান তার বয়স যখন ৫ বছর। মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা দুলাল দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই রিফার বাবাও মারা যান। পরে তার সৎ মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়। সৎ মা-বাবার অনাদর-অবহেলায় একদিন রিফা বাড়ি ছেড়ে ঢাকার টঙ্গীতে জামাইবাজার এলাকায় লতা ওয়াশিং ফ্যাক্টরিতে চাকরি নেন। চাকরির পর তার সৎ বাবা তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে থাকে। রিফা সৎ মা-বাবার আদর স্নেহের আশায় প্রতিমাসে তার বেতনের একটা অংশ সৎ বাবার হাতে তুলে দেন। এমনিভাবে চলে প্রায় দশ বছর। এরই মধ্যে সৎ বাবা আলমগীরের দৃষ্টি পড়ে রিফার নামে থাকে তিন বিঘা জমির ওপর। ছলেবলে এই জমি আত্মসাতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ওই সৎ বাবা।
ঘটনার দিন গত সোমবার রাতে সৎ বাবা আলমগীর রিফাকে নিয়ে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু চন্দ্রা থেকে লোকাল বাসে উঠলে রিফা এর কারণ জানতে চায়। হাটুভাঙ্গায় এক বাসায় খাওয়া-দাওয়া করে তারপর বাড়ি যাবে বলে তাকে জানানো হয়। এরই মধ্যে চলন্ত বাসে সৎ বাবা তাকে শশা এবং আমড়ার সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়। এক সময় সে বাসেই অচেতন হয়ে পড়ে। তার জ্ঞান ফেরে বুধবার দুপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে। জ্ঞান ফিরলে সে এসব তথ্য দেয় চিকিৎসক ডা. সীমান্তকে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিফা কাপা কাপা কণ্ঠে জানায়, একটু আদর স্নেহের আশায় বাবাকে টাকা দিয়েছি। তবু তা মেলেনি। মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান বলেন, রিফার নামে থাকা তিন বিঘা জমি আত্মসাৎ করার জন্যই যেকোন উপায়ে রিফাকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সৎ বাবা এই পন্থা অবলম্বন করে। রিফা সুস্থ হলেই ওই সৎ বাবার বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে জানিয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক