ভালুকা উপজেলার ঝালপাঁজা গ্রামের ব্যবসায়ী মহসিন সরকার (৫২) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে সিআইডি পুলিশের ময়মনসিংহ বিভাগের বিশেষ একটি টিম। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ফারুক, সাঈম, রাজিব ও মোশারফ হোসেন। গ্রেফতারকৃতরা ইতিমধ্যে আদালতে ওই খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সিআইডি পুলিশ সূত্রে জানাযায়, মহসিন সরকারের বাড়িতে একটি তক্ষক (বনজ প্রাণী) থাকত। ওই এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে আদিল তক্ষতের বিষয়টি রাজিবকে জানায়। রাজিব বিষয়টি রুবেল এবং আক্তার হোসেনকে জানায়। এরপর তারা সবাই মিলে পরিকল্পনা করে মহসিনের বাড়ির তক্ষকটি তারা ধরে নিয়ে কোটি টাকায় বিক্রি করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার রাতে (৩ অক্টোবর ২০১৯ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়) মহসিনের ঘরের জানালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে তক্ষক ধরতে ব্যর্থ হয় তারা। ওই রাতে ১১টার দিকে তারা আবার মহসিনের বাড়িতে গিয়ে তক্ষক খোজাখুঁজির চেষ্টা করে। কিন্তু এ সময় তারা মহসিনের কাছে ধরা পড়ে যায়। এদের একজনকে চিনে ফেলেন মহসিন। বিছানার নিচ থেকে রামদা বের করে ওদের ওপর হামলা করলে মহসিনকে ফারুক, সাঈম, রুবেল ও আক্তার মহসিনকে জাপটে ধরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে দুই পাশ থেকে টান দিয়ে ধরে। ঘটনাস্থলেই মহসিনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার সময় রাজিব ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে পাহাড়া দিচ্ছিলেন। খুনের পর ঘাতকরা মহসিনের ট্রাঙ্ক ভেঙ্গে দুটি মোবাইল সেটসহ অন্যান্য মাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন (৪ অক্টোবর) দুপুরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বসতঘরের খাট থেকে মহসিন সরকারের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায় মডেল থানা পুলিশ। নিহতের ঘর থেকে চুরি হওয়া দুটি মোবাইল সেট উদ্ধারের পরই ঘটনার জট খুলে। কুমিল্লার নাঙলকোটের বাসিন্দা মাহবুব হকের কাছ থেকে মোবাইল সেট দুটি উদ্ধার করা হয়। মাহবুব সেট দুটি পায় তার ছোট ভাই জুবাইরের মাধ্যমে।
জুবাইর জানান, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা গ্রামের মৃত ইয়াদ আলীর ছেলে ফারুকের কাছ থেকে মোবাইল সেট ক্রয় করেন তিনি। সেই সূত্র ধরে ভালুকার সিডস্টোর বাজারের একটি ওয়েল্ডিংয়ের দোকানের কর্মচারী ফারুককে আটক করে পুলিশ।
সি.আই.ডির সহকারী পুলিশ সুপার শওকত আলম পিপিএম বলেন, ‘গত ১০মার্চ রাতে ফারুক (২৪) ও উপজেলা বড়চালা গ্রামের ছফির উদ্দিনের ছেলে সাঈমকে (২০) আটক করা হয়। তাদের জবানবন্দির ভিত্তিতে পর দিন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার ঝালপাঁজা গ্রামের মোস্ত মিয়ার ছেলে রাজিব (২৩) ও উপজেলার শিরিরচালা গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোশারফ হোসেনকে (৩৫) আটক করা হয়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আটক ৪ জনই মহসিন সরকার হত্যায় জড়িত বলে জবানবন্দি দেয়। মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা (এস.আই) জিয়াউর রহমান বলেন, ‘লুন্ঠিত মোবাইলের সূত্র ধরেই এ খুনের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল