ময়মনসিংহের হালুুয়াঘাটে ভারতীয় সীমান্তে গুলিতে নিহত মানসিক ভারসাম্যহীন বাংলাদেশি যুবক আ. জলিলের (৩৪) অর্ধগলিত মরদেহ ৩ দিন পর ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। নিহত আ. জলিল সীমান্ত এলাকা সংলগ্ন পশ্চিম গোবরাকুড়া গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারতীয় ও বাংলাদেশি (১১২৪-৪-এস) নং পিলার সংলগ্ন নো-ম্যানস ল্যান্ডে ভারতীয় গাছুয়াপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ বীরেন্দ্র এস মারাক বাংলাদেশি হালুয়াঘাট থানার ওসি (তদন্ত) আবু বকরের নিকট লাশ হস্তান্তর করেন। এর আগে নিহতের বড়ভাই খলিলুরসহ ৩ সদস্যের একটি দল লাশ শনাক্তের জন্য পাঠানো হয়।
এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ক্যাম্পের কমান্ডার বিজয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গোবরাকুড়া কমান্ডার সুবেদার হারুন অর রশিদ, কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আ. মজিদ মজুমদারসহ স্থানীয় প্রতিনিধি মাসুদ করিম উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যটি নিশ্চিত করে হালুয়াঘাট থানার ওসি (তদন্ত) আবু বকর জানান, লাশ গ্রহণের পর পরিবারের নিকট হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই শুকুর আলী জানান, ২২ জুন রাতে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে ফিরে আসেননি মানসিক ভারসাম্যহীন জলিল। এরপরই নিখোজের বিষয়টি পরিবার পক্ষ থেকে জানানো হয় গোবরাকুড়া বিজিবি ক্যাম্পে।
তিনি দীঘদিন মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তার স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অবৈধভাবে সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে বলে দাবি স্বজন ও স্থানীয়দের।
এ ঘটনায় ২৩ জুন গোবরাকুড়া সীমান্ত ফাঁড়ির পক্ষ থেকে একজন বাংলাদেশী নিহত হওয়ার খবর বিএসএফকে অবগত করা হয়। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহতের লাশ উদ্ধার করতে ওইদিন বিকাল ৫টায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিএসএফের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে (এমপি-১১২৪-৪-এস) নং পিলার সংলগ্ন স্থানে বাংলাদেশ বডারগার্ড ৩৯ বিজিবির কোম্পানি অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক শেষে ৩৯ বিজিবির কোম্পানি অফিসার (সিও) জানান, ওইদিন রাতে কিছু বাংলাদেশি সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। বিএসএফ চ্যালেঞ্জ করলে তাদের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছুঁড়ে বিএসএফ। ঘটনাস্থলে একজন নিহত হলেও বাকিরা পালিয়ে যায়।
পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহতের লাশ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু ভারতীয় বিএসএফের পক্ষ থেকে মেডিকেল রিপোর্ট ও সাময়িক জটিলতার কারণে লাশ হস্তান্তর করতে পারেন নি। এ বিষয়ে উভয় দেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ বার্তা পাঠানো হবে। বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় বিজিবি টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন