কুড়িগ্রামে অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও উজানের পানিতে সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি দিনের পর দিন মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। গত ৫ দিন যাবত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে নদ নদীর নিম্নাঞ্চলের অনেক চর ও দ্বীপচর। ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর কয়েকটি পয়েন্টে মারাত্মকভাবে পানি বেড়ে বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
তবে সোমবার সন্ধ্যে ছয়টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, প্রত্যেকটি নদনদীর পানি দুপুরের পর দুই থেকে তিন সেন্টিমিটার কমতে শুরু করেছে। সন্ধ্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে পানি ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর, নুনখাওয়া পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার কমে ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর এবং ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার কমে ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ধরলা নদীর পানি কমছে বলে জানা যায়। তবে নদনদীর পানি পর্যায়ক্রমের আরো কমবে বলে কুড়িগ্রামের ওয়াপদার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান।
এদিকে, বন্যায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে জেলার ৮ উপজেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এ পর্যন্ত দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। একদিকে করোনা ভাইরাস দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের মাঝে আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে অপরদিকে বন্যার পানিতে দিশেহারা এখানকার নদীর চরের এসব মানুষ।
জেলার ৮ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভেসে গেছে কয়েক শতাধিক পুকুর ও বিলের মাছ। সবচেয়ে বেশি পুকুর ভেসে গেছে রাজারহাট উপজেলা, চিলমারী, নাগেশ্বরী ও রাজিবপুরে। যদিও এখনও জেলা মৎস বিভাগ মাছ চাষের ক্ষতির সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারেনি।
জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বন্যায় ৩ হাজার ৬২২ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। তবে পানি কমলে কিছুটা ফসল রক্ষা পাবে বলে জানানো হয়। জেলা প্রশাসন থেকে বানভাসীদের জন্য শুকনো খাবার হিসেবে ত্রাণ বিতরণ শনিবার থেকে শুরুর কথা বলা হলেও অনেকেই এখনও হাতে পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
তবে জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, আমরা ইতিমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করছি। কোনরকম ত্রুটি হবেনা এবং বানভাসীদের কোন সমস্যা হবেনা। প্রয়োজনে আমাদের আরো মওজুদ খাদ্য সরবরাহ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন