২৭ অক্টোবর, ২০২০ ২০:০৬

গার্মেন্টকর্মীকে ধর্ষণ; ইউপি শ্রমিক লীগের সম্পাদকসহ গ্রেফতার ৫

বাগেরহাট প্রতিনিধি

গার্মেন্টকর্মীকে ধর্ষণ; ইউপি শ্রমিক লীগের সম্পাদকসহ গ্রেফতার ৫

বাগেরহাটে পূজা দেখে বাড়ি ফেরার পথে ২২ বছর বয়সী এক গার্মেন্টকর্মীকে ধর্ষণের ঘটনায় সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য শেখ মিজানুর রহমানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

গত সোমবারের ঘটনায় মঙ্গলবার বিকালে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত শেখ মিজানুর রহমান (৩৫) বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য এবং বাকপুরা গ্রামের আব্দুল মজিদ শেখের ছেলে। গ্রেফতারকৃত অন্য চার জন হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার চিন্তারখোড় গ্রামের অমল মৃধার ছেলে বিকাশ মৃধা (১৯), নারায়ণ চন্দ্র সরকারের ছেলে সুকান্ত সরকার (৩২), অসীম বিশ্বাসের ছেলে বিধান বিশ্বাস (২৮) ও মো. আনোয়ার ফকিরের ছেলে মো.  সোহেল ফকির (২৩)। 

গ্রেফতারকৃতদের সন্ধ্যায় আদালতে পাঠালে বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবীর পারভেজ তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

ধর্ষণের শিকার ওই গার্মেন্টেকর্মী নিজে বাদী হয়ে মঙ্গলবার বিকালে বাগেরহাট মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যতন দমন আইনে বারুইপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য শেখ মিজানুর রহমানসহ ৮ জনের নামে মামলা দায়ে করেন। মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মামলার প্রধান অভিযুক্ত শেখ মিজানুর রহমানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শফিকুর রহমান জানান, সোমবার বিকেল থেকে বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন মণ্ডপে পূজা দেখে যাত্রাপুর বাজারে থেকে রাতে ভ্যানযোগে বাড়ি রওনা দেয় ওই গার্মেন্টকর্মী। রাত ১০টার দিকে বাকপুড়া মোড়ে পৌঁছালে শেখ মিজানুর রহমান জানতে চায় এতো রাতে কোথা থেকে আসছিস-বলে ভ্যান থেকে নামিয়ে রাখে। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাকপুড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নতুন ভবনের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে মিজানুর রহমান। পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে ওই তরুণীকে চিন্তিরখোড় এলাকায় রেখে চলে যায় মিজান। মেয়েটি একা একা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকে। 

এদিকে রাত ১২টার দিকে আসামি বিকাশ মৃধা, সুকান্ত সরকার, বিধান বিশ্বাস, মো. সোহেল ফকিরসহ কয়েকজন হদেরহাট বাজারস্থ আবুল হোসেনের বিল্ডিংয়ের পেছনে নিয়ে ওই গার্মেন্টকর্মীর শ্লীলতাহানি করে। 

নির্যাতিত মেয়েটির বাবা-মা জানান, এক বছর আগে আর্থিক কষ্টে মেয়েকে গার্মেন্টে কাজ করতে ঢাকায় পাঠাই। পূজার ছুটিতে মেয়ে বাড়িতে আসছিল। বন্ধুদের সাথে বিজয়া দশমীর দিন সোমবার রাতে পূজা দেখতে যাওয়া-ই কাল হল আমার মেয়ের। আমাদের মেয়ের উপর নির্যাতনের বিচার চাই।

এদিকে জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান মন্টু এ ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, বারুইপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, মামলা দায়েরের পর আমরা তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানকে এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগে আরও চারজনকে গ্রেফতার করেছি। গ্রেফতারকৃতদের মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবীর পারভেজের আদালতে তোলা হলে তিনি তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর