৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল দেশের লাল-সবুজে ঘেরা রক্তিম জাতীয় পতাকা। সেই দিনটিকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরে সকল এলাকায় লাল-সবুজের ফেরিওয়ালাদের কাঁধে ওড়ে বিজয়ের নিশান।
মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে হিলি স্থলবন্দরসহ দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় জাতীয় পতাকাসহ জাতীয় পতাকা সম্বলিত মাথায় বাধার বেল্ট, হাতের ব্রেসলেট, গালে ও কপালে পড়ার স্টিকার বিক্রিতে লাল-সবুজের ফেরিওয়ালাদের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি-এবারের বেচাকেনা।
পাড়া-মহল্লা ও বাজার ঘুরে এসব বিক্রি করে ফেরিওয়ালা। অনেকেই মোটরসাইকলে, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ছেলে মেয়েদের জন্য কিনে দিয়েছেন এসব পতাকা। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পতাকাসহ এসব বিক্রি কিছুটা কমেছে।
ক্রেতা মেহের আলী বলেন, আমার ছোট মেয়ের জন্য ছোট আকারের একটি জাতীয় পতাকা কিনেছি। আমাদের দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও তার ইতিহাস সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে জানানোর জন্যই এই পতাকা কেনা।
প্রধান রাস্তা ও বাজারে পায়ে হেঁটে পতাকা বিক্রি করছে ফরিদপুরের আজাহার। হাতে রয়েছে ছোট, মাঝারি, বড় আকারের পতাকা। প্রতিটি বড় আকারের লাল-সবুজ পতাকা ১৫০ টাকা, মাঝারি ১০০টাকা, ছোট আকারের ২০ থেকে ৩০ টাকা, মাথার ফিতা ১৫ টাকা, রবার ফিতা ২০ টাকা, লাঠি পতাকা ১০ টাকা আর চরকি পতাকা ১২ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি। এতে প্রতিদিন গড়ে তার বিক্রি হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকার। যা থেকে তার আয় হয় ৮০০-১০০০ হাজার টাকা।
কথা হয় ফরিদপুর থেকে পতাকা বিক্রি করতে আসা আজাহারের সাথে। তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে পতাকা বিক্রির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে গত ৪ দিন আগে দিনাজপুরের হিলির উদ্দেশে আসি। হিলিতে এসে বাজারে এবং বাসা বাড়িতে বিক্রি করছি এসব পতাকা। পতাকা বিক্রি করে তার সংসার চালান তিনি। এক ছেলে ও এক মেয়ের পড়াশোনার খরচও যোগান তিনি। শুধু পতাকা বিক্রি করে সংসার চলে না বরং এটাকে ভালোবাসি তাই রাস্তা রাস্তায় পতাকা বিক্রি করি।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে বাংলার বীর সন্তানরা আমাদের একটা স্বাধীন দেশ উপহার দিয়ে গেছেন। উপহার দিয়েছেন লাল-সবুজ পতাকা। তাদের দেওয়া লাল-সবুজ পতাকা বুকে ধারণ করে রেখেছি এবং বিজয়ের মাসে মানুষের নিকট বিজয়ের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই