ফিলিস্তিনের গাজা থেকে শুরু করে আফ্রিকার কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতময় অঞ্চলে ২০২৪ সালে শিশুদের ওপর সহিংসতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘের এক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। আর ২০২৩ সালের চেয়ে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে শিশুদের বিরুদ্ধে ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৩৬ হাজার ২২১টিই সংঘটিত হয়েছে ২০২৪ সালে। বাকি ৫ হাজার ১৪৯টি আগের বছরের হলেও তা এ বছর যাচাই করা হয়েছে। এটি গত ৩০ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
২০২৩ সালেও শিশু সহিংসতায় রেকর্ড হয়েছিল, তবে পরের বছর অবশ্য সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যায়। ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় সহিংসতা বেড়েছে ২১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সহিংসতায় সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত এবং কমপক্ষে ৭ হাজার জন আহত হয়। বর্তমানে নির্বিচার হামলা ও সহিংসতার প্রধান শিকার শিশুরাই বলেও দাবি করা হয়। এছাড়াও বহু শিশু একাধিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। এমন ভুক্তভোগী শিশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৪৯৫ জনে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ভার্জিনিয়া গাম্বা বলেন, যে ২২ হাজার ৪৯৫ শিশুর এখন স্কুলে পড়া বা মাঠে খেলাধুলা করার কথা, তারা আজ শিখছে কীভাবে গোলাগুলি আর বোমার মধ্যেও বেঁচে থাকতে হয়। এই শিশুদের আর্তনাদ আমাদের সবার রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মতো।
তিনি আরো বলেন, এটি যেন আমাদের জন্য সতর্ক সংকেত হয়। কারণ আমরা একেবারে সংকটসীমার কিনারায় পৌঁছে গেছি।
জাতিসংঘ প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ২০টি সংঘাতময় অঞ্চলে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তালিকা প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনের পরিশিষ্টে যুক্ত রয়েছে তথাকথিত ‘লজ্জার তালিকা’, যেখানে শিশুদের ওপর সহিংসতার জন্য দায়ীদের নাম প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় এ বছর নতুন করে যুক্ত হয়েছে হাইতির একটি সশস্ত্র গ্যাং জোটের নাম। তাদের বিরুদ্ধে শিশু হত্যা ও অঙ্গহানি, সশস্ত্র সহিংসতায় নিয়োগ, অপহরণ, মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা এবং যৌন সহিংসতার মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নাম এ বছরের তালিকাতেও রয়েছে।
সূত্র : এএফপি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত