আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ, ভোট ফর চেঞ্জ’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়বেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। ‘ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান বেড, ওয়ান টেবিল’ ভিশন নিয়ে ডাকসুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি। বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আমার বন্ধুরা যখন ক্লাস করত তখন আমি কোর্টে হাজিরা দিতে যেতাম। কারণ আমার নামে ১২টা মামলা ছিল। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কথা বলতে গিয়েই হাসিনা সরকারের রোষানলে পড়েছি। ভোটের অধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমি সাত মাস জেল খেটেছি। আমার বন্ধুরা যখন লাইব্রেরিতে পড়তে যেত, রিসার্চ পেপার তৈরি করছিল তখন আমি কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে বসে ভাবতাম কীভাবে ক্যাম্পাস থেকে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করা যায়। আমার প্রত্যাশা-ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা বিবেচনায় রাখবেন, দুর্দিনে তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে কে পাশে ছিল, তাদের জন্য কারা সংগ্রাম করেছে।’ তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর ভিসির বাসভবনের সামনে ডাকসুর দাবিতে আন্দোলন করেছি। কেবল ডাকসু নিয়ে আমি যত আন্দোলন করেছি তা সামনে আনলেও বড় পরিসংখ্যান দাঁড়িয়ে যাবে। তাই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে আমি সামনেও লড়ে যাব।’
ডাকসু নিয়ে পরিকল্পনা সম্পর্কে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের প্যানেলের নাম হচ্ছে “ডাকসু ফর চেঞ্জ, ভোট ফর চেঞ্জ”। স্লোগান হচ্ছে “নো মোর ডার্টি পলিটিকস, নো মোর ভায়োলেন্স, মেক দ্য ডাকসু ফর একাডেমিক এক্সিলেন্স”। আমাদের ভিশন হলো “ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান বেড, ওয়ান টেবিল”। শিক্ষার্থীদের ফুল ফ্রি স্কলারশিপ, আউটসোর্সিং, পার্টটাইম জবের ব্যবস্থা করতে চাই। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের যারা হলে সিট পায় না, তাদের আবাসনব্যবস্থা করা, যতদিন সিট না পায় ততদিন আবাসন বৃত্তির ব্যবস্থা করা। খাবারের মান উন্নয়ন করা, প্রয়োজনে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা। রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের কাজকে অটোমেশন করা। ওয়ান স্টেপ সার্ভিসে নিয়ে আসার চেষ্টা করব। শিক্ষার্থীদের পরিবহনসংকট সমাধান করার জন্য অ্যাপ নিয়ে আসা, শিক্ষার্থীরা যেন অ্যাপেই দেখতে পারে তার বাস কোথায় আছে সে ব্যবস্থা করা। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করব। ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করব। সেজন্য গ্রিন ফিউচার ফাউন্ডেশনের দেওয়া যানবাহনগুলোর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতে সুব্যবস্থা করব, বিশেষায়িত রিকশা থাকবে ক্যাম্পাসে। মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন করব। ক্যাম্পাসের ভবনগুলো টেস্ট করার ব্যবস্থা করব, কারণ অনেক ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। পুকুরগুলো সংস্কার করব যাতে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিভিত্তিক সংগঠনগুলোকে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করার চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘৭১ ও ২৪-এর চেতনা ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাজনৈতিক সংগঠনকে অধিকারভিত্তিক প্রতিযোগিতা ও কল্যাণমূলক ছাত্র রাজনীতির দিকে নেওয়ার চেষ্টা করব। এ ছাড়া হল ও একাডেমিক এলাকায় রাজনৈতিক কমিটি দিয়ে আধিপত্য সৃষ্টির চেষ্টা আমরাও করব না, কাউকে করেতেও দেব না।’