ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে প্রথমবারের মতো প্রাণঘাতী ‘ক্লাস্টার বোমা’ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরান একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে যা আকাশে বিস্ফোরিত হয়ে ছোট ছোট বোমা ছড়িয়ে দেয়— যার লক্ষ্য ছিল বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি বাড়ানো।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েল এই অভিযোগ তুলেছে। তবে এই বিষয়ে ইরানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, ইরানের ছোড়া যে ক্ষেপণাস্ত্রটি আকাশে ফেটে যায়, তা ক্লাস্টার বোমা বহন করছিল। এই ধরনের অস্ত্র যুদ্ধের অনেক পরেও বেসামরিক মানুষের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে থাকে, কারণ বিস্ফোরিত না হওয়া ছোট বোমাগুলো মাটির নিচে থেকে যায় এবং হঠাৎ বিস্ফোরণে প্রাণহানি ঘটায়।
কী এই ক্লাস্টার বোমা?
ক্লাস্টার বোমা হলো এমন একটি অস্ত্র, যার ভেতরে ছোট ছোট বহু বোমা (সাবমিউনিশন) থাকে। এটি আকাশ থেকে ফেলার পর মাঝ আকাশে ফেটে গিয়ে এসব বোমা বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে দেয়। বিস্ফোরণের পরও অনেক ছোট বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় থেকে যায়, যা পরবর্তী সময়ে বেসামরিক মানুষের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করে।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির তথ্যানুযায়ী, ক্লাস্টার মিউনিশন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হয়। পরে শীতল যুদ্ধের সময় এর মজুদ ব্যাপক হারে বাড়ানো হয়। মূলত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শত্রু ট্যাংক বা সেনাবাহিনী ধ্বংস করাই ছিল এর লক্ষ্য।
তবে এই বোমা নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে না। আবহাওয়া বা পরিবেশগত অবস্থার কারণে অনেক সময় লক্ষ্যচ্যুতি ঘটে, ফলে বোমা সামরিক লক্ষ্যের বাইরে গিয়ে বেসামরিক এলাকা বা জনবসতিতে পড়ে।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা
২০০৮ সালে ক্লাস্টার মিউনিশন কনভেনশন চুক্তির মাধ্যমে এই অস্ত্রের ব্যবহার, উৎপাদন, স্থানান্তর ও মজুদ নিষিদ্ধ করা হয়। এই কনভেনশনে ১২৩টি দেশ স্বাক্ষর করলেও যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেন এখনো এতে যোগ দেয়নি।
বিডি-প্রতিদিন/শআ