আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে অফিশিয়াল কোনো নির্দেশনা পায়নি সেনাবাহিনী। গতকাল ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম, কর্নেল স্টাফ, মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেট, সেনাসদর।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সেনাবাহিনী যেহেতু মাঠপর্যায়ে কাজ করছে তাই তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না এমন প্রশ্ন করা হলে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এখনো সরকারের পক্ষ থেকে অফিশিয়াল কোনো নির্দেশনা পাইনি। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করব।
মব ভায়োলেন্সকে সেনাবাহিনী কীভাবে দেখছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মব ভায়োলেন্স কিংবা জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী যে কোনো পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা মব ভায়োলেন্স অনেকাংশে কমিয়ে নিয়ে এসেছি। রংপুরের ঘটনায় যে মব ভায়োলেন্স ঘটেছিল সেখানে সেনাবাহিনী সঠিক সময়ে উপস্থিত হওয়ার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত থেকে পুশইনের বিষয়ে সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সতর্ক এবং সজাগ আছে। সীমান্ত এলাকায় তারা টহল বৃদ্ধি করেছে। সেসব জায়গায় স্থায়ী এবং অস্থায়ী ক্যাম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি ওইসব এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মতো বিষয় এখনো অনুভূত হয়নি, সে কারণে বিষয়টি বিজিবি ও কোস্ট গার্ড দেখছে।
সম্প্রতি অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কোনো তালিকা করা হয়েছে কি না, আর হয়ে থাকলে এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কী ব্যবস্থা নেবে, জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী বা যে কোনো সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারের সময় যে আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় এক্ষেত্রে আমরা গোপনীয়তা রক্ষা করি। তবে পরবর্তীতেও আমাদের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে আভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। ঈদুল আজহা-কেন্দ্রিক নিরাপত্তা কার্যক্রমে সেনাবাহিনী কতটা সন্তুষ্ট, জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, ঈদুল আজহার সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ বাস, রেলস্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালে দিন-রাত সার্বক্ষণিক টহল দিয়েছেন। এ ছাড়া স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে বাসের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। পুরুষ অফিসারদের পাশাপাশি নারী অফিসার ও সৈনিকরা রাস্তায় নেমে ঈদের সময় অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। গতকাল এ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত তিন সপ্তাহে সেনাবাহিনী ৫৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ৯৯০ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯ হাজার ৬৬৭টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৫ হাজার ২৬২ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে, যাদের মধ্যে রয়েছে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাত।