থাইল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলের ঘন বনভূমিতে এবার নতুন জীবন পেয়েছে সাম্বার হরিণের দল। থাইল্যান্ড সরকার ও বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ তহবিল (ডব্লিউডব্লিউএফ) এর উদ্যোগে বাঘের প্রাকৃতিক খাদ্যচক্র পুনর্গঠনে নেওয়া প্রকল্পে ২০টি হরিণ অবমুক্ত করা হয়েছে, যা এই অঞ্চলের বাঘের ভবিষ্যৎ বদলে দিয়েছে।
থাইল্যান্ডের জাতীয় উদ্যান বিভাগের (ডিএনপি) তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ওয়েস্টার্ন ফরেস্ট কমপ্লেক্সে গত ১৫ বছরে বাঘের সংখ্যা ৪০ থেকে বেড়ে ১৭৯-২২৩টির মধ্যে পৌঁছেছে। ডব্লিউডব্লিউএফের টাইগার্স অ্যালাইভ প্রকল্পের প্রধান স্টুয়ার্ট চ্যাপম্যান একে 'অবিশ্বাস্য' সাফল্য বলে উল্লেখ করেছেন।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাম্বার হরিণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যারা বাঘের প্রধান শিকার। ডিএনপি কর্মকর্তা ছাইয়া দানফো জানান, বাঘের খাদ্যঘাটতি দূর করতে বড় তৃণভোজী প্রাণীর সরবরাহ জরুরি ছিল, যা প্রকল্পটি নিশ্চিত করেছে।
ডব্লিউডব্লিউএফ থাইল্যান্ডের গবেষণা ব্যবস্থাপক ওয়ারাপান ফুমানী বলেন, আগে এই অঞ্চলে হরিণ ছিল খুবই কম। ফলে বাঘও কমে যায়। কিন্তু এখন নিয়মিত বাঘ দেখা যাচ্ছে এবং তারা বংশবৃদ্ধিও করছে।
থাইল্যান্ডের বাইরে কম্বোডিয়া, লাওস ও ভিয়েতনামে ইতোমধ্যে ইন্দোচাইনিজ বাঘ বিলুপ্ত হয়েছে। মিয়ানমারে মাত্র ২৩টি বাঘ অবশিষ্ট রয়েছে। বিশ্বে এক শতকে বাঘের সংখ্যা এক লাখ থেকে কমে মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজারে নেমে এসেছে বলে আইইউসিএন জানিয়েছে।
অন্যদিকে ভারত ও নেপালে বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা বেড়েছে। থাইল্যান্ডের এই প্রকল্পও আফ্রিকার মডেল অনুসরণে সফলভাবে এগোচ্ছে। অবমুক্ত হরিণের গলায় জিপিএস কলার লাগিয়ে চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, যাতে প্রজাতির টিকে থাকা ও বাঘের খাদ্যশৃঙ্খল নিশ্চিত করা যায়।
ছাইয়া দানফো জানান, অনেক হরিণ শিকারির খাবারে পরিণত হলেও বাকিরা সফলভাবে বংশবৃদ্ধি করছে এবং খাদ্যচক্রকে সমৃদ্ধ করছে। ফলে থাইল্যান্ড বাঘ সংরক্ষণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নজির স্থাপন করেছে।
বিশ্বব্যাপী বাঘের বিলুপ্তি ঠেকাতে এ ধরনের প্রকল্পই হতে পারে নতুন আশার আলো।
সূত্র: এএফপি