বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, আমরা শুধু নির্বাচনের জন্যই আন্দোলন করি নাই। আমরা দেশকে নতুনভাবে গড়তে চাই। তারেক রহমানের ৩১ দফার বাস্তবায়ন করেই দেশকে এগিয়ে নিব।
শুক্রবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির দুই দশকে পদার্পণ উপলক্ষে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন এ্যানি
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ্যানি বলেন, জুলাই আন্দোলন হঠাৎ করে হয়নি। এটি একটি গণঅভ্যুত্থান। এই গণঅভ্যুত্থানে সকলের ঘাম ছিল, সকলের ত্যাগ ছিল। জুলাই আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
এ্যানি আরও বলেন, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলেছে তারাই জেল খেটেছে। জুলুমের শিকার হয়েছে। বছরের পর বছর মানুষ এই স্বেরাশাসকের বিরুদ্ধে লড়েছে। গুমের একটা নতুন সংস্কৃতি ফ্যাসিস্ট হাসিনা এদেশে তৈরি করে দিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার চাই। বিচার সংস্কার চলছে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের ঐক্য আরও সুদৃঢ় করতে হবে। ফ্যাসিবাদ যেভাবে আমাদের দেশকে অসম্মানিত করেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে একটি নির্বাচিত সরকার তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র ও সংবাদপত্র একে অপরের পরিপূরক, গণমাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্রের চোখ। স্বাধীন সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, বিগত সময়ে গণমাধ্যমগুলো স্বৈরাচারী শাসকের তেলবাজি করেছে। মূলধারার গণমাধ্যমের একটি অংশ জনগণকে ভুল তথ্য দিয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু গণমাধ্যম তাদের নৈতিকতা বজায় রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে যারা ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতা করে তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জোরালো ভূমিকা পালন করে। তবে বড় মিডিয়াগুলোর অধিকাংশ সাংবাদিক ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখার জন্য তোষামোদি করে ভুল সংবাদ প্রকাশ করেছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীন বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত প্রতিটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। সম্প্রতি একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে নিয়ে তৈরি কার্টুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেই শেয়ার করেছেন-এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
জবিসাসের সভাপতি ইমরান হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদদীন, জামায়াত ইসলামীর ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব মো. নিজামুল হক নাঈম, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতাকর্মীরাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে একটি আনন্দ র্যালির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। র্যালি শেষে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা ও ফল উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ সময় সমিতির সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের উপস্থিতিতে জবি ক্যাম্পাস মিলনমেলায় পরিণত হয়।
এছাড়া দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও র্যাফেল ড্র’র মধ্যদিয়ে শেষ হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত