বগুড়ার শেরপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না বালু উত্তোলন। শুক্রবার থেকে উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া ও নলডিঙ্গী এলাকায় বাঙালি নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করেছেন প্রভাবশালীরা।
ফলে নদী তীরবর্তী আবাদি জমি ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেইসঙ্গে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন নদীপাড়ের সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি নিজেদের সরকার দলীয় ব্যক্তি পরিচয় দিয়ে বাঙালি নদীর একাধিক স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিলেন। একইসঙ্গে এসব বালু পার্শ্ববর্তী জায়গায় জমা করে রেখে সময় সুযোগ মতো তা বিক্রি করে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করেন।
গত বছরের ৩ অক্টোবর খবর পেয়ে বাঙালি নদীর গজারিয়া ও নলডিঙ্গী এলাকায় তাদের অবৈধ বালু মহালে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ। কিন্তু অভিযানকালে তাদের ভাড়াটে লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার সঙ্গে থাকা কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়। এমনকি তাদের বহনকারী জিপ গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।
এই ঘটনায় ১৩ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে টানা দুইমাস নদীর উক্ত স্থানে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। তবে মামলার পলাতক আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় এসেই বছরের প্রথমদিন থেকেই বালু উত্তোলন শুরু করেছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তারা ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তারা সবাইকে ম্যানেজ করেই সব কাজ করে থাকেন। তাই ইউএনও গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েও এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিছুই হলো না। এখন আবার নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি শুনেছি। সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ব্যবস্থা নিতে বলেছি। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবরিনা সারমিন সাংবাদিকদের জানান, ফসলি জমি ও বসতভিটা রক্ষায় দু-একদিনের মধ্যেই সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। অন্যদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চললেও উপজেলার অন্তত ২৫টি পয়েন্টে ফসলি জমির মাটি কাটাও চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই