২২ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:০৯

কাউন্সিলর তরিকুলের হত্যা ছিলো পূর্ব পরিকল্পিত, ঘাতক আটক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

কাউন্সিলর তরিকুলের হত্যা ছিলো পূর্ব পরিকল্পিত, ঘাতক আটক

সিরাজগঞ্জে কাউন্সিল তলিকুল ইসলাম খানকে ছুরিকাঘাতে হত্যাকারী ঘাতক জাহিদুল ইসলাম (২০) ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুর এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহায়তায় জাহিদুলকে গ্রেফতার করা হয়। সে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সাহেদনগর ব্যাপারীপাড়া মহল্লার টিক্কা ব্যাপারীর ছেলে।  

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম জানান, কাউন্সিলর তরিকুল হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছিল জাহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে জাহিদুল স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছে, উট পাখি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী শাহাদত হোসেন বুদ্দিনের পক্ষে প্রচারণার জন্য নির্বাচনের তিনদিন আগে সে ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জে আসে। দুদিন সে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেয়। নির্বাচনের আগের রাতে মামলার এজাহারে উল্লেখিত এক আসামির (তদন্তের স্বার্থে নাম বলা হয়নি) বাড়িতে গোপন বৈঠক করা হয়।

বৈঠকে উটপাখি মার্কার বুদ্ধিন হেরে গেলে কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খানের ওপর হামলা চালানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বারবার শাহাদত হোসেন বুদ্ধিন হেরে যাওয়ায় এমন হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলেও সে জানিয়েছে। বৈঠকে প্রধান আসামি শাহাদত হোসেন বুদ্দিনসহ মামলার অন্যান্য আসামিরা উপস্থিত ছিল। সে আরো জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলার জন্য এজাহার নামীয় এক আসামির বাড়িতে রামদাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র মজুদ রাখা হয়। ওই এজাহার নামীয় আসামি তাকে হত্যায় ব্যবহত ছুরিটিও দেন। 

পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ফলাফল ঘোষণার আগে অন্যান্য আসামিদের সাথে সে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি নিয়ে শহিদগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রার্থী বুদ্ধিন ও তার অন্যান্য সমর্থকদের সাথে উপস্থিত হয়। সন্ধ্যা ৭টার কিছু আগে ফলাফল ঘোষণায় ডালিম প্রতীকের প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খান বিজয়ী হলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় তরিকুলের পেটে ছুরিকাঘাত করে জাহিদুল স্থান ত্যাগ করেন। এরপর সে ছুরিটি নিজ বাড়িতে লুকিয়ে রেখে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুরে চলে যান।  

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতার জাহিদুলই সরাসরি এ হত্যার সঙ্গে জড়িত। তার দেওয়া তথ্যমতে ব্যাপারীপাড়া মহল্লার মোকছেদের একটি পরিত্যক্ত ডোবার পশ্চিম অংশে মাটিতে পোতা অবস্থায় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের বিভিন্ন টিম কাজ করছে। আশা করছি অল্পদিনের মধ্যেই আমরা ভাল কিছু করতে পারবো।  

সংবাদ সম্মেলনে সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধ আক্তার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন ফারুকী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।  

প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ৬ননছ ওয়ার্ড (নতুন ভাঙ্গাবাড়ী- বেপারী পাড়া-শাহেদনগর) কাউন্সিলর পদে ৮৫ ভোটে বিজয়ী হন তারিকুল ইসলাম। ফলাফল ঘোষণার পর বিজয় উল্লাস করার সময় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আহত হন তিনি। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়ার পরে মারা যান।

এ ঘটনায়  রবিবার  রাতে নিহতের ছেলে ইকরামুল হাসান হৃদয় বাদী হয়ে পরাজিত প্রার্থী ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন বুদ্দিনসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০/৫০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার ৪ দিন পর মূল হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে স্বপন ব্যাপারী নামে মামলার ২৭ নম্বর আসামি গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন।  

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর