১৮ অক্টোবর, ২০২১ ১৭:০৩
পৌরসভা নির্বাচন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের ‘শত্রু’ আওয়ামী লীগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের ‘শত্রু’ আওয়ামী লীগ

প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে মো. মোখলেসুর রহমান নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির চারজন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও প্রত্যাহারের শেষ দিনে তিনজন তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছাড়াও জেলা যুবলীগ নেতা বিদ্রোহী হিসেবে থেকে যাওয়ায় অনেকেই বলছেন, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামী লীগ।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. হারুনুর রশিদ হারুন সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম, হারুন পত্নী সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া সমর্থিত পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন, পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহনেয়াজ খান সিনা ও সাবেক মেয়র মাওলানা আব্দুল মতিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন (১৭ অক্টোবর) মো. নজরুল ইসলাম ছাড়া অন্য তিনজন তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন জামায়াতের মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী মো. মোখলেসুর রহমান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন ও জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম। তবে বছাইয়ের দিন জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিমের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়।

এদিকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় তিনি দলের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। এদিকে সোমবার নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী মো. মোখলেসুর রহমান (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন (মোবাইল ফোন), মো. নজরুল ইসলাম (নারিকেল গাছ) এবং জামায়াত নেতা মোস্তাফিজুর রহমান (জগ) প্রতীক পেয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন।

তবে বিএনপি ও জামায়াতের একক প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগ দলীয় এবং বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন করায় সাধারণ ভোটাররা বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। আওয়ামী লীগের বৃহৎ অংশ দলীয় প্রার্থী মোখলেসুর রহমানের জন্য নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। অন্যদিকে আওয়াম লীগে কতিপয় নেতা জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটনের পক্ষে গোপনে কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ উঠেছে।

আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, পৌরসভার উন্নয়ন করতে হলে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কারণ দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের কেউ মেয়র নির্বাচিত হতে না পারায় পৌরসভার দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। বরং সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকল নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন পৌরবাসী।

এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন বিএনপি-জামায়াত ঘনিষ্ঠতার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, গত নির্বাচনে তিনি পরাজিত হওয়ার পর থেকেই মাঠে রয়েছেন। কিন্তু দল তাকে মূল্যায়ন না করলেও সাধারণ মানুষের ভালোবাসা নিয়ে তিনি এবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. আব্দুল ওদুদ বলেন, স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার প্রার্থী হিসেবে মোখলেসুর রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাই দল যাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছে, তার পক্ষেই সকল নেতাকর্মী একযোগে কাজ করবেন। আর জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর