পাহাড়ে জমে উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের আমেজ। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় মুখর পাহাড়। তাই ব্যস্ত সময় পাড় করছে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত আসন ও সাধারণ ওয়ার্ডের প্রার্থীরা। রাত দিন চলছে মাইকিং। তাই পাহাড়ি পল্লীগুলোতে ভোট উৎসবে মেতেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিরা। যার যার প্রার্থী সমর্থনে দলে দলে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন হাজারো মানুষ।
এবার রাঙামাটি উপজেলা ইউপি নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রার্থী না থাকায় স্বতন্ত্র হিসেবে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ও সাধারণ প্রার্থীর সাথে ভোট লড়বে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। তবে পাহাড়ে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে আওয়ামী লীগের। তাই সংবাদ সম্মেলন করে পাহাড়ে নির্বাচনীয় এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পা স্থাপনের দাবিও জানিয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে রাঙামাটির ১০টি উপজেলার মধ্যে তিন উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেগুলো হলো-কাপ্তাই উপজেলার ২ নম্বর রাইখালী, ৪ নম্বর কাপ্তাই ও ৫ নম্বর ওয়াগ্গা। বিলাইছড়ি উপজেলার ১ নম্বর বিলাইছড়ি, ২ নম্বর কেংড়াছড়ি ও ৩ নম্বর ফারুয়া। আর বরকল উপজেলার ১ নম্বর সুবলং, ২ নম্বর বরকল ও ৩ নম্বর আইমাছড়া ইউনিয়ন।
এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী থাকলেও নেই বিএনপির ও জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী। তাই এবার ইউপি নির্বাচনে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে জাতীয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সাথে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাথে। শেষ মুহূর্তে নির্বাচনের প্রচারণায় এগিয়ে দুই দলই। আলোচনা-পর্যালোচনায় মেতেছে ভোটারাও। বেছে নিতে চায় তাদের পছন্দের প্রার্থীদের।
তিন উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র মিলে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৩০ জন। তারা হলেন-কাপ্তাই উপজেলার ২ নম্বর রাইখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের থোয়াই সা প্রু (নৌকা)। স্বতন্ত্র প্রার্থী মংক্য মারমা (আনারস) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এনামুল ( চশমা)।
কাপ্তাই ৫ নম্বর ওয়াগ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের আপাই মারমা (নৌকা) ও স্বতন্ত্র চিরনজিত তঞ্চঙ্গ্যা (আনারস)। ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল লতিফ (নৌকা) ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র মো. মহিউদ্দীন পাটোয়ারী বাদল (আনারস)।
বিলাইছড়ি উপজেলার ১ নম্বর বিলাইছড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ভদ্রসেন চাকমা (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সুনীল কান্তি দেওয়ান (আনারস) ও মিথুন তঞ্চঙ্গ্যা (টেবিল ফ্যান )। ২ নম্বর কেংড়াছড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রামা চরণ মারমা (রাসেল) (নৌকা)। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন-অমরজীব চাকমা (আনারস), টিপু চাকমা (ঘোড়া) ও সমতোষ চাকমা (চশমা)।
৩ নম্বর ফারুয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়মী লীগের মনোনীত প্রার্থী বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা (নৌকা)। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন জীবন বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা (আনারস), চাথোয়াই মার্মা (ঘোড়া ) ও নির্মল তঞ্চঙ্গ্যা (টেলিফোন)।
বরকল উপজেলার ২ নম্বর বরকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের প্রভাত কুমার চাকমা (নৌকা)। স্বতন্ত্র হিসেবে আছেন নন্দ বিকাশ চাকমা (আনারস)। ১ নম্বর সুবলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের পবিত্র চাকমা (নৌকা), স্বতন্ত্র তরুণ জ্যোতি চাকমা (চশমা) ও আবুল কালাম (হাতপাখা)। ৩ নম্বর আইমাছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের মো. নাছির উদ্দিন (নৌকা)। স্বতন্ত্র সুবিমল চাকমা (আনারস) ও মো. ইউছুফ আলী (হাতপাখা)।
প্রসঙ্গত, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ নভেম্বর ২য় ধাপে রাঙামাটির বরকল, কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলার ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩য় ধাপে অর্থাৎ ২৮ নভেম্বর রাজস্থলী ও কাউখালি উপজেলার ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই