শিরোনাম
- 'দাঁতভাঙা জবাব' দিয়েছে পাকিস্তান, শেহবাজের দাবি
- সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে সভ্যতা বিনির্মাণে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে যাচ্ছেন প্রকৌশলীরা
- রাষ্ট্র সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য চাই: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা
- পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত ভারতকে ‘নিরাপদ বিনিয়োগ গন্তব্য’ ভাবার পথে বাধা হবে: রয়টার্স
- ভারত থেকে এভাবে ‘পুশ–ইন’ সঠিক প্রক্রিয়া নয় : খলিলুর রহমান
- ৬৭ টেস্ট, ৪৩০১ রান: বিদায় বললেন রোহিত শর্মা
- বাংলাদেশিদের ভিসা চালুর অগ্রগতিতে আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ প্রধান উপদেষ্টার
- কুড়িগ্রামে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত
- উলবাকিয়া মশায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে আশা দেখছেন গবেষকরা
- পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনার হুঁশিয়ারি পাকিস্তান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
- রোগীদের সুস্থতায় নার্সদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : চসিক মেয়র
- সিরাজগঞ্জে আন্দোলনে আহতদের মাঝে ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার চেক বিতরণ
- টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা রোহিত শর্মার
- দেশে প্রথমবারের মতো দুইটি ‘জলাভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা
- পাকিস্তানে ভারতের হামলা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ ঝুঁকি বাড়িয়েছে: তুরস্ক
- পুলিশের ৯ অতিরিক্ত ডিআইজিকে বদলি
- পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার মধ্যেও চলবে পিএসএল
- রৌমারী-ভূরুঙ্গামারী সীমান্তে ৩৬ রোহিঙ্গা ও ৮ বাংলাদেশিসহ আটক ৪৪
- পাকিস্তানের হামলায় ভারতে হতাহত বেড়ে ৫৮: ভারতীয় সেনাবাহিনী
- 'শব্দদূষণ রোধে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই'
পানি, তেল পড়া আর তাবিজ দিয়ে চলছে জটিল রোগের সমাধান!
হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
অনলাইন ভার্সন

হতদরিদ্র রিকশাচালক মুর্শিদ মিয়া (৩২) গেল দু’মাস আগে জিনের (স্থানীয়দের ভাষ্যমতে) সান্নিধ্য পেয়ে বনে গেছেন আধ্যাত্মিক কবিরাজ। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগী আর স্বজনদের ভিড়ে নৈশকালীন আসর বসিয়ে পানি আর তেল পড়া দিয়ে চলছে তার কবিরাজি চিকিৎসা। যা দিয়ে মাথা ব্যথা, প্রতিবন্ধীদের শারীরিক সমস্যা, প্যারালাইজড ও হাঁপানির মতো জটিল রোগ সারবে বলে আশ্বাস কবিরাজের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজনের।
সব ধরনের রোগ ভালো করে দিচ্ছে কথিত এই কবিরাজ, এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে। প্রতিদিন রাত ১০টা বাজার আগেই সরিষার তেল পানির বোতল আর তাবিজ নিয়ে ছুটছেন হাজারো মানুষ। যে যেভাবে পাচ্ছে সেভাবে ভিড় করছে এই কবিরাজের বাড়িতে।
এমন আধ্যাত্মিক চিকিৎসা চলছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার আশ্রমপাড়া গ্রামের নেওয়াজ আলীর বাড়িতে। কথিত কবিরাজ মুর্শিদ মিয়া নেওয়াজ আলীর ছেলে বলে জানা যায়।
সচেতন মহলরা বলছেন, তাবিজ বা পানি পড়া দিয়ে এসব রোগ মুক্তির ব্যাখ্যা আদৌ আছে কিনা জানা নেই। আর উপজেলা প্রশাসন বলছে প্রতারণার অভিযোগ পেলে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।
সরেজমিন জানা যায়, মুর্শিদ মিয়া কিছুদিন আগেও ছিলেন রিকশাচালক ও পাশাপাশি ইটভাটার শ্রমিক। দিনরাত কাজ করে টানতেন সংসারের হাল। সেই লোকটি হঠাৎ-ই বনে গেছেন কবিরাজ। প্রতিদিন শত শত মানুষকে দিচ্ছেন পানি ও তেল পড়া।
তার বাবা নেওয়াজ আলীর দাবি, জিনের পরামর্শে পাওয়া কিছু নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। বেশ কিছুদিন আগে প্রতিবেশী এক প্যারালাইজড রোগী আমার ছেলের কাছে আসে। পরে তাকে জিনের পরামর্শ অনুযায়ী ফুঁ ও তেল পড়া দেওয়া হয়। কয়েকদিন পর ওই মানুষটা ভালো হয়ে যায়। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে এভাবেই মানুষ আসতে থাকে।
চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার ঝাউগড়া ভূইয়া বাড়ির বয়োবৃদ্ধ ইছব আলী বলেন, অনেকদিন ধরে প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে আছি। গত দু’দিন ধরে ভালো হওয়ার আশায় এখানে আসতে হচ্ছে। এখনো কোনো উন্নতি হয়নি।
নালিতাবাড়ী উপজেলার মাথাফাটা এলাকার স্বপন মিয়া জানান, কোমরের ব্যথার নিরাময় পেতে সরাসরি ওই কবিরাজের শরণাপন্ন হই। কিন্তু কোমরের ব্যথা কাটেনি আগের মতই রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও একাধিক ব্যক্তি জানান, কথিত এই কবিরাজ সরাসরি কারো কাছ থেকে টাকা না নিলেও ভিন্ন উপায়ে জটিল রোগীদের কাছ থেকে ওষুধ সরবরাহ করতে হবে বলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এছাড়াও নারী রোগীদের বেলায় ভিন্ন কক্ষে নিয়ে তেল ও ঝাড়ফুঁক করেছেন। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর।
কথিত ওই কবিরাজের সাথে দেখা ও কথা বলতে গেলে সহযোগীদের বাধার মুখে ফিরে আসতে হয়। তবে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও কবিরাজের সহযোগী রাজীব বলেন, ওনি জিনের নির্দেশনা মোতাবেক মানুষের সঠিক চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। প্রত্যেক দিন আগত মানুষদের পরিস্থিতি বলে দেয়, আমাদের পক্ষ থেকে সঠিক সেবাটা পাচ্ছে। এতে বিন্দু পরিমাণ সন্দেহের অবকাশ নেই। বিষয়টি খোলাসা করতে রোগীদের সাথে কথা বলতে বলেন ওই সহযোগী।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ ধরনের বিষয় গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে জানতে চাইলে হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুনীর আহমেদ জানান, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ ধরনের কোনো চিকিৎসা নেই। এটা মূলত অপচিকিৎসা। সাধারণ মানুষদের অপচিকিৎসার শিকার না হতে তিনি পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজাউল করিম বলেন, আমি কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি ছবি পেয়েছি। তবে অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন এমন কারও কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই
এই বিভাগের আরও খবর