নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বাবার কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ৯ বছরের এক মাদ্রাসার শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শামছুল মিয়া নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে।
এদিকে, গুরুতর অবস্থায় রবিবার রাতে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটি পৌর শহরের স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ধর্ষক শামছুল মিয়া পৌর শহরের মার্কাজ এলাকার বাসিন্দা।
খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ফখরুজ্জামান জুয়েল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আসামি গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এটি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকেলে শিশুটি মাদ্রাসা থেকে ফিরে মাঠেই সহপাঠীদের সাথে খেলাধুলা করছিল। এ সময় বাবার কথা বলে শিশুটিকে ডেকে নিয়ে যায় শামছুল মিয়া। কিছুটা অদূরে একটি কুমড়া বাগানে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। শিশুটি ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন অভিযুক্ত। এদিকে, বিকেল পার হয়ে সন্ধ্যা হলেও মেয়ে বাড়ি না ফেরায় মেয়েকে খুঁজতে বের হন মা। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে কুমড়া ক্ষেতের পাশ থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান। পরে শিশুটি কথা বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে পড়লে শিশুর বাবাকে জানিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী শিশুটির মা জানান, বিকেলে মাদ্রাসা থেকে ফিরে সহপাঠীদের সাথেই বাসার পাশে একটি মাঠে খেলা করছিল। সন্ধ্যার আগেই আবার মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খেলাধুলা করা অবস্থায় তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। ভেবেছি হয়েতো মাদ্রাসায় চলে গেছে। কিন্তু মাদ্রাসায় গিয়েও দেখি ওইখানে যায়নি। পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে কুমড়া ক্ষেতের পাশে তাকে পাই। এরপর বাসায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করতেই কান্না করতে করতে অজ্ঞান হয়ে যায়। আমরা ভয় পেয়ে মানুষ ডাকাডাকি করে পরে মোবাইল ফোনে তার বাবাকে বিষয়টি জানিয়ে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসি।
ভুক্তভোগী শিশুর বাবা বলেন, আমি বাজার থেকে ফিরে বাড়িতে আসলে শুনতে পাই এ ঘটনা। পরে শিশুটিকে নিয়ে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। আমার মেয়ের সাথে যে এমন কাজ করেছে, আমি তার বিচার চাই, শাস্তি চাই। গত তিন মাস হলো নিয়মিত মাদ্রাসার যাওয়া শুরু করেছিল। কিন্তু এর মাঝে এমন একটি ঘটনা ঘটে গেল।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. শ্রীকান্ত কর্মকার বলেন, রাতে শিশুটিকে তার বাবা মা হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা প্রথমিক চিকিৎসা দিয়েছি এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এখন শিশুটির অবস্থা কিছুটা ভালো।
বিডি প্রতিদিন/এমআই