২৫ জুন, ২০২২ ১৮:০৮

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, দুর্ভোগ কমেনি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, দুর্ভোগ কমেনি

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমর নদীসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি দ্রুত কমতে শুরু করেছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এ অবস্থায় কমেনি বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ। তবে চর ও ও দ্বীপচরের  নদ-নদীর নিম্নাঞ্চলের মানুষগুলো এখনও পানিবন্দী জীবন যাপন করছেন। এখনও প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষের কষ্টের সীমা নেই। 

অনেকের ঘরবাড়ি থেকে পানি সরতে থাকলেও অনেকের বাড়িতে এখনও পানি থাকায় সংকট কমেনি। এছাড়াও তিস্তা নদীসহ সবকটির পানি কমায় আবার দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। তিস্তার অববাহিকায় প্রায় ১২টি পয়েন্টে নদী ভাঙন চলছে। গ্রামীণ ও চরের রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়েছে। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার অনেকটা নিচে নেমে এসেছে। ফলে কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কিন্তু সেইসাথে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। 

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান, বন্যায় জেলায় প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৭ হাজার কৃষক। পুরো পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, চলতি বন্যায় প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩৮ মেটিকটন চাল, ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার উপ-বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অনেক দুর্গম চরে এখন পর্যন্ত ত্রাণ পৌছেনি স্বীকার করে বলেন,খবর পেলে তাৎক্ষণিক ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে। ব্রহ্মপুত্র নদের হকের চর এলাকার জনৈক রফিকুল মিস্ত্রী জানান,বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে ব্রহ্মপুত্র নদে পাক দিয়ে ভাঙন শুরু হয়। দুইদিনে আমার দু ছেলের বাড়িসহ ৯জনের বাড়িভিটা ভেঙে চলে নিয়ে যায়।এখন ভিটে মাটি হারিয়ে আমরা সবাই খোলা আকাশের নিচে থাকছি। এখন সবাই পাশের গুজিমারীর চরের বাবুর ১২শতক জমি ২০ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছে আমার দুই ছেলে। সেখানে যাচ্ছি দেখি কদিন থাকা যায়। একইভাবে হকের চরের ভিটে মাটি হারিয়ে নিঃস্ব মাইদুল, মোহাম্মদ আলী, সৈয়দ দফাদার, আম্বর আলী, আনোয়ার আলী ও মুকুল এখনও তারা খোলা আকাশের নিচে আছেন। উলিপুরের সাহেবের আলগা ইউনিয়নের দুর্গম চর বাগুয়ায় নদী ভাঙন প্রকট। সেখানকার অনেকেই নদী ভাঙনে নিঃস্ব। 

ওই এলাকার গৃহস্থ আক্কাস আলী জানান, নদীর ভাঙ্গনে চলতি বন্যা মৌসুমে আনন্দবাজার সংলগ্ন চর বাগুয়ায় ৩৪টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। সাহেবের আলগা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবু সায়েম দাবি করেন, গুজিমারী চরে ৫টি গ্রামের ৩ হাজার মানুষ এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ সহায়তা পাননি। 

হাতিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, ত্রাণ সহায়তা অপ্রতুল হওয়ায় আমাদের এ ইউনিয়নে বন্যার্তদের দুর্ভোগ বেড়েছে। আর দুর্গম চরাঞ্চলে যেতে না পারায় আরো খুবই খারাপ অবস্থা।

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর