পাবনার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় পদ্মা নদীতে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সাপ্তাহের ব্যবধানে ব্রিজের ৩নং পিলার (গার্ডার) থেকে ২নং পিলার পর্যন্ত নদীর চর ভেঙে গেছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে নদী রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়তে পারে। সেই সঙ্গে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন সেতুরও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, পাকশী এলাকার পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। এতে তীরের মাটি ও বালুর স্তুপ ধসে পড়ছে নদীতে। এ সময় কথা হয় স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে।
স্থানীয় প্রবীণ আনিছুর রহমান বলেন, এর আগে পদ্মা নদীতে দফায় দফায় পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় একাধিকবার ভাঙন হয়েছে। কয়েক দিন ধরে নদীতে পানি স্থিতিশীল থাকায় ভাঙন বন্ধ ছিল। হঠাৎ আবার নদীতে স্রোত ও পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন শুরু হয়েছে। চরের কৃষকরা জানান, গত ৪০ বছরে এমন ভাঙন দেখা যায়নি।
পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক ইবনে সালাম বলেন, গত এক সাপ্তাহের ব্যবধানে পদ্মায় পানি বেড়েছে দুই মিটারের বেশি। ২৫ জুলাই পানির পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। আর ৪ আগস্ট দুপুর ১২টায় পানির পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার। প্রতিদিনই পদ্মায় গড়ে ২৫-৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানি বাড়ছে। একইসঙ্গে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পদ্মার চরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগের সেতু প্রকৌশলী নাজিব কাওছার বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পিলারের আশপাশের স্থান নদীতে ভেঙে গেলেও ব্রিজের কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ ব্রিজের পিলার নদীর গভীরে পাইলিং করে স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নদী রক্ষা বাঁধের ক্ষতি রোধে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে একাধিকবার আমার কথা হয়েছে। যৌথভাবে নদীর তীর পরিদর্শন করে নদী ভাঙন রোধে একটি নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আশপাশের এলাকাসহ ভাঙন রোধে গত বছর জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। এবার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি জেনেছি। পানি কমতে শুরু করলে জিওব্যাগ ডাম্পিংসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে ভাঙন প্রসঙ্গে বলেন, এ ভাঙনেব্রিজের বা নদী রক্ষা বাঁধের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল