২৩ মার্চ, ২০২৩ ১৮:৫৩

পাবনার ঈশ্বরদীতে ধর্ষণের অভিযোগে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার ঈশ্বরদীতে ধর্ষণের অভিযোগে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

ঈশ্বরদী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম শাওন

ধর্ষণের অভিযোগে পাবনার ঈশ্বরদী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম শাওনকে গ্রেফতার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শাওনের বিরুদ্ধে প্রেমিকা রুমানা ইসলাম রূপা ঈশ্বরদী থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।

ছাত্রলীগ নেতা শাওন শহরের ঈদগাহ রোডের শহিদুল ইসলামে পুত্র। প্রেমিকা রুমানা ইসলাম রূপা নাটোরের সিংড়া উপজেলায় হাটকদমতলী গ্রামের আমির হোসেনের মেয়ে ও ঈশ্বরদীতে কর্মরত। রূপা শহরের শেরশাহ রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের এবং ছাত্রলীগ নেতা শাওনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটার দিকে শাওনকে আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রেমিকা রূপা দীর্ঘদিন ধরে শাওনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলেও তিনি এড়িয়ে চলছিলেন। বুধবার সন্ধ্যার পর রূপা ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ঈদগাহ রোডে শাওনের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিকে থাকে। এ সময় বাড়ির লোকজন রূপাকে মারধর করে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে রূপা গলায় দড়ি নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাঝোতার মাধ্যমে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও শাওন বিয়েতে রাজি হয় না। শেষ পর্যন্ত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে পুলিশ উভয়কে থানায় নিয়ে যায়। পরে রাত দেড়টার দিকে রূপা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। 

রূপার অভিযোগ, শাওন তাকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো। এরপর রূপার নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বেশ কিছুদিন শাওন লাপাত্তা ছিল। গত ২১ মার্চ রাতে ঈশ্বরদী বাস টার্মিনাল এলাকায় শাওনকে পেয়ে রূপা জনসম্মুখে টেনে-হেঁচড়ে থানায় নিয়ে যায়। 

 রূপা জানান, ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরির সুবাদে শাওনের সাথে তিন বছর আগে পরিচয় হয়। শাওন সে সময় ঈশ্বরদী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল। পরিচয়ের সুবাদে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন শাওন। কিন্তু পরে বিয়ে করতে অস্বীকার করলে ধর্ষণ মামলার সিদ্ধান্ত নিলে শাওনের বাবা শহিদুল ইসলাম বিয়ের আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, শাওনের পরিবার প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের কাছে আমাদের ভাড়াটিয়া হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।  এ সুযোগে শাওন অবাধে মেলামেশা শুরু করে। আবারও বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। শাওন আমাদের বিশেষ মুহূর্তের ছবি ভিডিও করে রাখে। তার সাথে যোগাযোগ করে বিয়ের জন্য চাপ দিলে ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয়। 

রূপা বলেন, আমার গচ্ছিত টাকা শাওনকে দিয়েছি। সে বলেছিল এ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেই বিয়ে করবে। টাকা নেওয়ার পর থেকে সে আমার সাথে যোগাযোগ না করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অভিযুক্ত শাওনের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, রূপা আমাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিল। তার চলাফেরা সন্দেহজনক হওয়ায় বাড়ি থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল। তবে তার ছেলের সাথে সম্পর্কের বিষয়টি জানেন না বলে জানান তিনি।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর